ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরের রাণীশংকৈল-নেকমরদ মহাসড়কের দেড় কিলোমিটারের মাঝে তিনটি কালর্ভাট রয়েছে। তবে মহাসড়কের পাশে থাকা পানি নিষ্কাশনের নালাটি মাটি দিয়ে ভরাট করা। তাতে মার্কেট বাড়িঘর স্থাপন করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
আর এ কারণে পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের টিএন্ডটি পাড়া, হ্যালিপ্যাড পাড়া, হাজ্বী পাড়া ও দক্ষিণ সন্ধারই এলাকার একাংশের প্রায় দশ হাজার মানুষ সামান্য বৃষ্টিতেই পানিবন্দি হযে পড়ে। এতে বর্ষার মৌসুমে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে এলাকাবাসীর। মূলত জেলা পরিষদের আওতাধীন মহাসড়কের পাশের নালাটি সঠিক তদারকির অভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাণীশংকৈল থেকে নেকমরদ সড়কের শিবদিঘী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়কে একটি কালর্ভাট রয়েছে। সেখান থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে টিএন্ডটি অফিসের সামনে সড়ক সংযোগ কালর্ভাট রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটারের মধ্যে ওই সড়কের ঘুঘুডারা নামক এলাকায় একটি কালভার্ট রয়েছে। এর মধ্যে দুটি কালর্ভাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের আর একটি টিএন্ডটি অফিসের চলাচলের রাস্তার নিজ অর্থায়ানের কার্লভাট। মূলত এই তিন কালভাট দিয়েই উল্লিখিত এলাকাসমূহের পানি নিষ্কাশন হয়ে সড়কের অপরপ্রান্তের বিলে চলে যেত। বর্তমানে নালাগুলো ভরাট করায় তিনটি কালভার্টই অচল পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এখন থেকে দশ বছর আগে সড়কের সাইডে পানি নিষ্কাশনের নালা ছিলো মূলত জেলা পরিষদের আওতাধীন। কিন্তু তা দখল হতে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পানি নিষ্কাশনের জায়গায় মাটি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালাম, ব্যবসায়ী সাজেমান, সাবেক আর্মি আনোয়ার, সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম, চা ব্যবসায়ী নুর আলম, এছাড়াও উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করেছে সড়ক, নালা ভরাট করে ওজন মাপা মেশিন বসিয়েছেন ভাটা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, ড্রাইভার খোরশেদ আলী মাটি ভরে তাতে চাতাল নির্মাণ করেছেন।
একইভাবে টিএন্ডটি সংলগ্ন নালায় মাটি ভরাট করেছে কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, মোকসেদ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন নালায় মাটি ভরাট করে মার্কেটের রাস্তা করেছে মুন্না ও মাসুম টুনটুনরা। মাটি ভরাট করা প্রসঙ্গে কুলি শ্রমিক নেতা মোকসেদ আলী বলেন, সবাই মাটি ভরাট করেছে তাই আমরাও করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা তাঁতীলীগের সম্পাদক নুর ইসলাম, উপজেলা কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোখলেসসহ অন্তত দশজন বাসিন্দা জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই তাদের বাড়ি আশপাশ পানিতে ভরে যায়। পানি যাওয়ার কোন জায়গা নেই। বেশ কয়েক বছর ধরে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই এভাবে জেলা পরিষদের জমিতে থাকা নালা মাটিতে ভরাট করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক সব ঠিকঠাক রেখে নালাগুলো আবারো খনন করার দাবি জানান তারা।
জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) রামকৃষ্ণ মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে অব্যশই বিষয়টির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান নালা ভরাটের বিষয়টি তিনি লক্ষ্যে করেছেন জানিয়ে বলেন, নালা ভরাটের কারণে আশপাশের বাসিন্দারা জলবদ্বতায় পড়ে। অব্যশই এটি পুনঃখননের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্র দেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: