সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে শরতের বিদায়ের পর চলছে হেমন্তকাল। শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট ও গ্রামীণ জনপদ। ফসলের মাঠে শষ্যের কচি ডগায় শিশির বিন্দু হীরার মত চকচক করছে। সাঁঝ সকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর ধীরে শীত নামছে প্রকৃতিতে।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রকৃতিতে হালকা শীতের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। তবে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ভোরের কুয়াশার চাদরে ঢাকা রাস্তাঘাট ও গ্রামীণ জনপদই যেন জানান দিলো হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম দুই জেলায় শীতের আগমনী বার্তা। ক্রমেই কমছে বাতাসের আর্দ্রতা আর বাড়ছে হিমেল ঠাণ্ডা পরশ।
বর্তমানে দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলা শীত অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে ঠাণ্ডার কারণে ভোর বেলায় কাঁথা শরীরে মুড়িয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। ভোরবেলা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে সবদিক। এ কারণে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। শীতের আগমনে গ্রামাঞ্চলের বৃদ্ধদের ও শিশুদের শীতের কাপড় পরিধান করে পথ চলতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার লালমনিহাট শহর এবং পাঁচটি উপজেলাই কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল।
কথা হয় কুড়িগ্রাম সদরের গুচ্ছ গ্রাম মৌলভীপাড়া এলাকার মুরসালিন (৮), মিলন (৭) ও নয়ন (৬) এর সঙ্গে। তারা জানায়, হুজুরের কাছে আরবি পড়তে ভোরে তারা মসজিদে যায়। দুদিন থেকে ভোরে একটু একটু করে শীত পড়ছিল। আজ শীতের পরিমাণ একটু বেশি। মা শীতের কাপড় পরিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া সকালে পানিতে অজু করতে ঠান্ডা লাগে।
পাঁচগাছি ইউনিয়নের নওয়াব এলাকার ষাটোর্ধ্ব জয়নাল মিয়া বলেন, আমি দিনমজুরের কাজ করি। কয়েকদিন ধরে হালকা শীত পড়ছিল। কিন্তু আজ ঠান্ডা বেশি অনুভব হওয়ায় বাধ্য শীতের কাপড় পরে কাজে যাচ্ছি। আমাদের তো শীতের ভারী কাপড় নেই, তাই শীত বাড়লে তো ঘর থেকেই বের হতে পারি না।
পাটেশ্বরী এলাকার রহমত আলী (৫৫) বলেন, আমি কুড়িগ্রাম শহরে যাচ্ছি ব্যবসার কাজে। আজ শীত বেশি মনে হচ্ছে। সাইকেলে চড়ে ঠান্ডা লাগছে।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, আজ কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রকৃতিতে শীতের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে আজ ভোরে কুয়াশার পরিমাণ ছিল বেশি। এ শীত আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শেষ হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: