চিকিৎসা সেবার নামে মাদক ও নারীর নেশায় হাতুরে ডাক্তার

সময় ট্রিবিউন | ১৪ আগষ্ট ২০২১, ০১:৩৯

মহামারীতে মানব সেবায় চিকিৎসকদের জীবন উৎসর্গ করার নজির বিশ্বের ইতিহাসে বিরল নয়। তবে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হাতুরে ডাক্তারের মাদক ও নারীর নেশার অভিযোগ ঝড় তুলেছে এলাকাবাসীর মনে। এমনই ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ বাজারে। যা ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

রামগঞ্জ বাজারের হাতুরে ডাক্তার অভয় বিশ্বাসের সঙ্গে নামে মাত্র চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত তার সহযোগী ও আপন ভাগনে গণেশ। সম্প্রতি গণেশের একটি অপকর্ম ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ওই নারীর নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয় কিছু আপত্তিকর ছবি ও কল রেকর্ডের স্বীকারোক্তি।

জানা যায়, মেয়েটি মুসলিম ও বিবাহিত এবং অপর দিকে গণেশ হিন্দু। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর বিষয়টি নজরে আসে অনেকের।

স্থানীদের অভিযোগ, ডাক্তার অভয় তার ভাগনে গণেশকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে নানা অপকর্ম চালিয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গণেশের প্রতারণার শিকার হয় মুসলিম মেয়েটি। একই সঙ্গে স্থানীয় যুবকদের বিভিন্ন ঘুমের ওষুধ ও মাদক তৈরির দ্রব্যাদি সরবরাহ করতো অভয় ও গণেশ।

গণেশের বিষয়টি নিয়ে ভূক্তভোগী মেয়েটির কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা সত্যতা জানান। তবে আপাতত সামাজিক কারণে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে নারাজ মেয়েটির পরিবার।

মেয়েটি জানায়, তারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত এবং পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডা. অভয় নিজেও এমন নারী কেলেঙ্কারিতে ধরা পড়ে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন। তবে এবারও স্থানীয় নামে মাত্র এক কথিত সাংবাদিক শাহীন আলমের মধ্যস্থতায় গণেশের অপকর্মের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে, একজন হিন্দু হয়ে একজন মুসলিম নারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেনস্থা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আলেম সমাজ। তারা বলছেন, মেয়েটির পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ নেই বলে, সমাজের এতো বড় অপকর্মের বিচার রাষ্ট্র অবশ্যই করবে।

তাদের দাবী, এ ঘটনায় ছেলে মেয়ে উভয়কেই বিচারের আওতায় আনতে হবে। কেউ নারী হলেই সব অপরাধ মাফ পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে গণেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, গণেশ পলাতক রয়েছে বলে জানায় মামা ডাক্তার অভয়। ভাগনের সঙ্গে নিজের অপরাধ নিয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার অভয়, কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে বিষয়টি এলাকায় ঢালাওভাবে জানাজানি হওয়া ডাক্তার অভয়কে সামাজিকভাবে বয়কট করার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। তারা বলছেন, মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নামে বাসায় গিয়ে এমন অপকর্ম আবারও ঘটাবে কিনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

রামগঞ্জ বাজার মসজিদের সভাপতি ও টুপামারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি সবার জানা দরকার। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে এর সুষ্ঠু বিচার সম্ভব হবে।

টুপামারী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, বিষয়টি জানি। আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: