বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে গত কয়েক দিনে ডজন খানেক ফিশিং ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ট্রলারে থাকা সব মাছ ও মালামাল লুট করে অর্ধশতাধিক জেলেকে আটকে রেখেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করছে বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।
কুতুবদিয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন কোম্পানি জানান, গত ৫ দিনে জলদস্যুরা অন্তত ১২-১৫টি ট্রলারে হানা দিয়েছে। ভারি অস্ত্রের মুখে লুটপাট চালানোর পর এসব ট্রলারে থাকা ৫০ জনের বেশি জেলেকে পাঁচটি ট্রলারে আটকে রেখেছে। বাকিদের ছেড়ে দেয়। জলদস্যুরা আটকে রাখা ৫০ জেলের জন্য কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে বলে জানান শুক্রবার ফিরে আসা কয়েকজন জেলে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি এর মধ্যে কোস্ট গার্ডকে জানিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ কারণে অপহরণের শিকার জেলেদের পরিবারে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
ডাকাতি হওয়া ‘এফবি মায়ের দোয়া’ ট্রলারের মালিক নেজাম উদ্দিন কোম্পানি বলেন, গত শনিবার (৩১ জুলাই) সাগরে রওনা দেয় আমার ট্রলার। সাতদিন সাগরে মাছ শিকারের পর ফিরে আসার পথে বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া চ্যানেলের অদূরে জলদস্যুরা গতিরোধ করে জাল ও প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ লুট করে। তারা মাঝিসহ পাঁচ জেলেকে আটকে রেখেছে। আটকে রাখা জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে জলদস্যুরা।
আল্লাহর দান’ নামে ফিশিং ট্রলারের মালিক তৈয়ব উল্লাহ বলেন, দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলার সাগরে গেছে। ঋণ করে ট্রলার সাগরে পাঠিয়েছি। মাছ, জাল সব রেখে দিয়েছে জলদস্যুরা।
কক্সবাজার জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাগরে আবার ডাকাতি শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহের বিষয়টিও জেনেছি। ডাকাতির কবলে পড়া ট্রলারের অধিকাংশ বাঁশখালী-আনোয়ারা এলাকার।
কোস্টগার্ড পূর্বজোনের গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ ও মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আবদুর রউফ জানান, আমরা এখনো নিশ্চিত নই কয়টা ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে বা কতজন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে আটক রাখা জেলেদের উদ্ধারের জন্য কক্সবাজারের সকল স্টেশনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে যে সব নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে তাও শনাক্ত করা হয়েছে। যে কোনো সময় অভিযানের সফলতা আসবে বলে জানান তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: