চাঁদপুরের ৪০ টি গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদ

সময় ট্রিবিউন | ২০ জুলাই ২০২১, ২০:১২

ফাইল ছবি

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ও পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে সর্বপ্রথম নবচঁন্দ্র দর্শনের নির্ভরযোগ্য সংবাদের ভিত্তিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও চাঁদপুরের প্রায় ৪০টির অধিক গ্রামে আগাম ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে।

এ উপলক্ষে হাজীগঞ্জের সান্দ্রা দরবার শরীফের পীর মুফতী আল্লামা ইসহাক রহ. এর মাজার শরীফ জামে মসজিদে সকাল ১০টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতের ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরীফের পীর সাহেব কেবলা অধ্যক্ষ আল্লামা জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। পরে অন্যান্য গ্রামেও ঈদের জামাত ও সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন সান্দ্রা দরবার শরীফের অনুসারীরা।

মঙ্গলবার (২০ জুলাই) ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করা হবে। এসব গ্রামে ৯১ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। গ্রামগুলো হলো- শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, আইকপাড়া, ভুলাচো,বদরপুর, উটতলী, নুরপুর, কাইতাড়া, সুড়ংগচাল, বাশারাসহ মোট ১১টি গ্রাম।

গত বছর করোনাভাইরাসের কারণে এসব গ্রামের ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত না হলেও এবার সকল ঈদগাহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও আগাম ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে মতলব উত্তর উপজেলার ১৮টি গ্রামে। গ্রামগুলো হলো- উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নস্থ পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দি, লতুর্দী, সাতানী ও দক্ষিণ মাথাভাঙ্গার আংশিক, সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের আমিয়াপুর গ্রামের একাংশ, ইসলামবাদ ইউনিয়নের মধ্য ইসলামবাদ গ্রামের একাংশ, ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের একাংশ, এখলাছপুর ইউনিয়নের মধ্য এখলাছপুর (বড়ইকান্দি) গ্রামের একাংশ এবং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ফরাজীকান্দি, রামদাশপুর, চরমাছুয়া, হাজিপুর, দক্ষিণ রামপুর, সরকারপাড়া ও ঠাকুরপাড়া।

পাশাপাশি হাজীগঞ্জে উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর মণিহার, বড়কুল, অলিপুর, বেলচো, রাজারগাঁও, ঝাকনী, কালচো, মেনাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামেও আগাম ঈদ উল আযহা উদযাপিত হচ্ছে।

সাদ্রা দরবার শরিফের পীরজাদা মুফতী বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ পালনের রেওয়াজ চালু করেন। ১৯৩১ সাল থেকে সাদ্রা মাদ্রাসায় আমার দাদা এবং তার মৃত্যুর পর আমার বাবা ঈদ জামাতের ইমামতি করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি এর দায়িত্বে রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ বছর করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঈদের জামাত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। মাওলানা ইসহাক ওই বছরই নিজ গ্রামে ফিরে উদ্যোগ নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন। গ্রামের অসহায় ও দুস্থদের আর্থিক সাহায্য দিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা চালু করেন। পরে তিনি দরবার শরীফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

এছাড়া চাঁদপুরের পাশাপাশি নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানে মাওলানা ইসহাক খানের অনুসারীরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: