বগুড়ার গাবতলীতে পারিবারিক বিরোধের জেরে পানের সঙ্গে উকুন মারার বিষ মিশিয়ে খাইয়ে ননদ সাথী বেগমকে (২৭) হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিষক্রিয়ায় শাশুড়ি রাশেদা বেগম (৫০) অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে উপজেলার ধোরা গ্রামে এ ঘটনায় জড়িত থাকায় স্বামী আল-আমিন মণ্ডলের হত্যা মামলায় পুলিশ গৃহবধূ পপি আকতারকে (২২) গ্রেফতার করেছে।
বিকালে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোমিন হাসানের আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পরে তাকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গাবতলী থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন।
পুলিশ, এজাহার সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ধোরা মধ্যপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হক মণ্ডলের ছেলে আল-আমিন মণ্ডল চার বছর আগে বগুড়া সদরের বুজরুকবাড়িয়া কাজীপাড়ার জহুরুল ইসলামের মেয়ে পপি আকতারকে বিয়ে করেন। তাদের তিন বছর বয়সী আতিকা খাতুন নামে একটি মেয়ে রয়েছে।
বিয়ের পর থেকে মতবিরোধের কারণে পপির সঙ্গে শ্বশুর মোজাম্মেল হক মণ্ডল (৫২) ও শাশুড়ি রাশেদা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে পপি তার শ্বশুর ও শাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ১৩ জুলাই সকাল ৯টার দিকে পপি জর্দার সঙ্গে উকুননাশক বিষ মেশানো পান শ্বশুর ও শাশুড়িকে খেতে দেন। শ্বশুর পান না খেলেও শাশুড়ি রশেদা বেগম খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর পল্লী চিকিৎসক ডেকে তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে উপজেলার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের মালিয়ানডাঙ্গা গ্রামের উজ্জ্বল আকন্দের স্ত্রী সাথী বেগম গত ১৪ জুলাই সকালে ধোরা গ্রামে বাপের বাড়ি ছুটে আসেন। এ নিয়ে সাথীর সঙ্গে ভাবি পপির ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে পপি আকতার কৌশলে ননদ সাথী বেগমকেও উকুননাশক বিষ খাওয়ান। এতে সাথী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাথী মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতালের মর্মে প্রেরণ করে।
গাবতলী থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, বোনকে হত্যা ও মাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আল-আমিন শুক্রবার সকালে থানায় স্ত্রী পপি আকতারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে একমাত্র আসামি পপি আকতারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ননদকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকালে তাকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি রেকর্ডের জন্য বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোমিন হাসানের আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: