চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

সময় ট্রিবিউন | ১৬ জুলাই ২০২১, ০৭:২৩

ফাইল ছবি

জনগণের সুপেয় পানি নিশ্চিতে সরকারের দেয়া গভীর নলকুপ দিয়ে গ্রাহকের কাছ বিপুল পরিমান অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অসংখ্য অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী, বন্দর থানায় হয়েছে সাধারণ ডায়েরীও।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বন্দরের ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে কেবল একটি ইউনিয়নের ৮১ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ২টি প্রকল্প থেকে নিয়েছে ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা। আবার টাকা নিয়েও অনেক গ্রাহককে দেয়া হয়নি নলকূপ এমন অভিযোগও করেছেন তারা।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে গভীর নলকূপ স্থাপন বাবদ পে অর্ডারের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা করে নেয়ার কথা থাকলেও নগদে আদায় করা হয়েছে ২০ হাজার ৫০০ টাকা করে।

ধামগড় ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জাঙ্গাল গ্রামের বাসিন্দা মীর হোসেন জানান, গভীর নলকূপ বসিয়ে দেয়া কথা বলে ধামগড় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ তার কাছ থেকে ২০ হাজার ৫০০ টাকা নেন। নলকূপ স্থাপনের পর তিনি জানতে পারেন নলকূপ স্থাপন বাবদ সরকারকে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা করে। একইভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি।

এছাড়া সরকারি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপনের নামে ২০ হাজার ৫’শ টাকা করে নিয়েছেন। টাকা নেয়ার সময় তাদের কোনো রসিদও দেয়া হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জাঙ্গাল গ্রামের জালাল ব্যাপারী বন্দর থানায় এ নিয়ে সাধারণ ডায়েরী করেছেন। তিনি জানান, সরকারি একটি সাবমার্সিবল কল নিতে তিনি ত্রিশ হাজার টাকা চেয়ারম্যানকে দেন। পরে ডিসি অফিসে স্বাক্ষী দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন ওই কলের মুল্য ১০হাজার টাকা। তিনি কেন ডিসি অফিসে স্বাক্ষী দিতে গেলেন এ নিয়ে তাকে হুমকি-ধমকি দেন চেয়ারম্যান। পরে তিনি বিষয়টি নিরাপত্তার স্বার্থে সাধারণ ডায়েরী করেন থানায়।

একই অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে জাঙ্গাল চৌরাস্তা জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে, মসজিদের একটি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপনের জন্য ২০ হাজার ৫’শ এবং আনষাঙ্গিক খরচের জন্য আরো ৩ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। পরে জানতে পারেন সরকারি নির্ধারিত ফি ১০ হাজার ৫’শ টাকা।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে তার বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন অনিয়ম ও সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী। এর মধ্যে রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি ২৫ লাখ টাকা দেখিয়ে ক্রয় করে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। আয় বহির্ভূতভাবে ৭কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদনহীণ ইট ভাটা স্থাপন করেছেন। অনুমোদন ছাড়া ব্রহ্মপূত্র নদের পাড়ে ‘রিভারভিউ চেয়ারম্যান পার্ক’ স্থাপন করছেন তিনি। এছাড়া চাঁদাবাজি, টেন্ডারবানিজ্য, কমিশন বানিজ্যসহ আরো এলাকাবাসীর এমন অনেক অভিযোগের পাহাড় এখন জেলার প্রশাকের টেবিলে।

এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী শাহ আলম জানান, চলতি বছর বন্দর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে দুটি (আর্সেনিক নিরসনে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সব দেশে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্প) প্রকল্পের আওতায় ৪৮০টি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে ইউপি ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদকে ফোন করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: