জরিমানার পরির্বতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন ইউএনও

পঞ্চগড় প্রতিনিধি | ১৩ জুলাই ২০২১, ০৭:২৭

ছবিঃ সংগৃহীত

বর্তমানে দেশে সরকার কতৃক ঘোষিত চলমান লকডাউন বাস্তবায়নসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করতে গিয়ে এক মাছের দোকানদারকে জরিমানা না করে খাবার সামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা।

রবিবার (১১ জুলাই) বিকেলে তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের বোয়ালমারী বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করার সময় আলাউদ্দিন নামে এক মাছের দোকানদা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দোকান বন্ধ না করে দোকান খোলা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা তার দোকানে যান। পরে ওই দোকানদার আলাউদ্দিনের দরিদ্রতা ও অসহায়ত্বের কথা শুনে তিনি জরিমানা না করে সাথে সাথে তার হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।

মাছের দোকানাদার আলাউদ্দিনের বাড়ি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ গ্রামে। ৪ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। মাছের দোকান করেই চলে তার সংসার৷

ভ্রাম্যমাণ আদালত সুত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যা ৬ টায় তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় জাতীয় মহাসড়কের পাশে কালান্দিগঞ্জ সংলগ্ন বোয়ালমারী নামক গ্রাম্য বাজারে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী দোকান খোলা রাখার নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় ওই বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত ও বাজার মনিটরিং করতে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে তার দৃষ্টিগোচর হয় রাস্তার পাশে একটি দোকানের সামনে জীর্ণ শরীরে ৮/১০টি ছোট ছোট মাছ যা প্রায় পঁচে যাওয়ার উপক্রম তা নিয়েই বসে আছেন চল্লিশোর্ধ্ব ওই দোকানদারের দিকে। পরে তিনি দোকান খোলার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার বলেন চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা তেমন ভালো চলছে না। কয়েক দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে চলছে তার সংসার। তাই পেটের দায়ে অসুস্থ শরীর নিয়েও বিধি নিষেধ অমান্য করেও কয়েকটি মাছ বিক্রিয় অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। পরে তার কথা শুনে সাথে সাথে পরিস্থিতি ও মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকারি বিধি নিষেধ ভঙ্গের দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা/দন্ড না দিয়ে আলাউদ্দিনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক (ত্রাণ) সহায়তা তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা।

এদিকে দণ্ডের পরিবর্তে ত্রাণ সহায়তা পেয়ে খুশি হয়ে দোকানদার আলাউদ্দিন জানান, আমি গরীব মানুষ। ছোট মাছের দোকানে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে বেচাকেনা করে কেন রকম ভাবে আমরা সংসার চলতো। লকডাউনে মানুষ তেমন বাজার আসে না তাই মাছ বিক্রি করতে না পারে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ায় মাঠে নেমে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনী। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে থাকায় বেশীর ভাগ সচেতন হচ্ছে এবং অপ্রয়োজনীয় বাইরে ঘোরাঘুরি প্রবনতা হ্রাসও পেয়েছ। রোবাবার উপজেলার বোয়ালমারী এলাকায় বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সময় আলাউদ্দিন নামে ওই মাছের দোকানদের অসহায়ত্বে কথা শোনার পর তাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে সচেতন করি এবং তাকে সাথে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেই। পরবর্তীতে তাকে আরও সহযোগীতা করা হবে। এছাড়া আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত গরীর অসহায়দের খুঁজে খুঁজে খাদ্য সামগ্রী সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি আগামীতেও তা অব্যহত থাকবে।

এম মোবারক হোসাইন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: