অতিমারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১২ জন করোনায় এবং পাঁচজন উপসর্গে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ১০ জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনজন, নাটোরের দুজন, নওগাঁ এবং পাবনার একজন করে মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (০২ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে মৃত সাতজন রাজশাহীর, দুজন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলার এবং একজন পাবনা জেলার বাসিন্দা ছিলেন। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে রাজশাহীর তিনজন, নওগাঁর একজন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪০৫ শয্যার রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৬৮ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন।
করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২০২ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ২০৬ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৬০ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৬ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৫ জন।
বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৩৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৯০ ও রামেক ল্যাবে ১৯১ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত জুনে রামেক হাসপতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে মারা গেছেন ৪০৫ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৮৯ জনের। গত ২৯ জুন করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২৫ জন মারা যান। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি।
গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ১৬১ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৫ হাজার ৯২৭ জন। এই ১৪ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: