আশুগঞ্জে উৎপাদন নেই বিদ্যুৎকেন্দ্রে , গুনতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৪

ছবিঃ সংগৃহীত
জেলার আশুগঞ্জে ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্ট ১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। অথচ চলতি মাসে কেন্দ্রটি মাত্র একদিন আট মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর সক্ষমতার মাত্র ১৩ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয় কেন্দ্রটি।

‘ইউনাইটেড আশুগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট মডিউলার পাওয়ার প্লান্ট সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানার বাংলাদেশের প্রথম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

চালুর পর এটি ‘এশিয়ান পাওয়ার গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। অথচ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখন যেন কোনো কাজেই আসছে না। তবে নিয়ম অনুসারে সরকারকে ঠিকই ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তাদের কোনো ধরনের চাহিদা দেওয়া হচ্ছে না।

সাম্প্রতিককালে চাহিদা বেশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর পরবর্তী পাঁচ বছর বেশ ভালোভাবেই উৎপাদন করে আসছিল। কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখান থেকে বিদ্যুৎ নেওয়ার চাহিদা না দেওয়ায় উৎপাদন করতে পারছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন।

এতে রয়েছে ২০টি ওয়ার্টসিলা, ২০ ভি ৩৪ এসজি ইঞ্জিন জেনারেটর সেট, ২০টি ওয়েস্ট হিট রিকভারি বয়লার, একটি স্টিম টারবাইন, চারটি ১১/২৩০ কেভি ৭০/৮০ এমভিএ পাওয়ার ট্রান্সফরমার। উৎপাদন শুরুর পর প্রায় পাঁচ বছর বেশ ভালোভাবেই উৎপাদনে ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। তবে ২০২০ সালের পর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চাহিদা দেওয়া হচ্ছে না।

২০১৫ সালের ৮ মে ইউনাইটেড আশুগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরের অক্টোবর মাসে গ্যাস-ইঞ্জিনচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

সরকারি আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন লিমিটেড এবং বেসরকারি ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজেন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ মালিকানায় স্থাপিত হয়। এর প্রকল্প ব্যয় ছিল এক হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। এ কেন্দ্রটি মোট ১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম।

কেন্দ্রটি নিয়মিত উৎপাদনে না থাকলেও অন্যগুলোর মতো ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়ে যাচ্ছে। এতে সরকারকে অনেক টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে নিয়মিত উৎপাদন করতে না পেরে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও হতাশ। কেননা এতে কেন্দ্রের যন্ত্র নষ্ট হয়ে উৎপাদনক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্লান্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী রায়হানুর রহমান বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাহিদা দিলে আমরা সে অনুযায়ী উৎপাদনে যাই। কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে আমাদেরকে একেবারেই চাহিদা দেওয়া হচ্ছে না। চাহিদা না পেয়ে কেন্দ্রটি সক্ষমতা অনুযায়ী নিয়মিত উৎপাদনে যেতে পারছে না বলে এর যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ারও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: