স্মার্ট মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর আদান-প্রদানের মতো গুরুতর অপরাধে ১৫ জন, নকলের দায়ে আরও ৩ জনসহ মোট ১৮ পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। একই সাথে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৭ শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বহিস্কৃত পরীক্ষার্থীদের সবাই দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল। অন্যদিকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ৫ জন মাদরাসা এবং অপর ২ জন স্কুলের শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র ও আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৃথকভাবে এ আদেশ দেওয়া হয়।
সূত্রমতে, চলমান দাখিল পরীক্ষায় আজ গণিত বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। এসময় তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে জনৈক পরীক্ষার্থী স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি উঠিয়ে বাইরে পাঠিয়ে উত্তর সংগ্রহ করে খাতায় লিখছিল। ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মওদুদ আহমেদ হল পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি তার নজরে আসে। পরে ওই পরীক্ষার্থীর মোবাইল হাতে নেওয়ার পর একই মোবাইল থেকে আরও একটি মোবাইলে ওয়াফাই যুক্ত দেখে অন্য পরীক্ষার্থীদের সার্চ শুরু করেন।
এসময় একে একে মোট ১৫ জন পরীক্ষার্থীকে পরস্পর একইভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সংগ্রহ করার প্রমাণ মেলে। এসব স্মার্ট ফোন পরীক্ষার্থীরা পায়ের উরুতে রাবার দিয়ে বেঁধে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে অসদুপায় অবলম্বন করছিল বলে জানান মওদুদ আহমেদ।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা আফসানা উপস্থিত ছিলেন। একই সময়ে নকলের দায়ে আরও ৩ দাখিল পরীক্ষার্থীসহ মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় দায়িত্বরত মোট ৫ জন শিক্ষককে। মোবাইল ফোনে অসদুপায় অবলম্বনকারী ১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জনই শুধুমাত্র এক বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল বলে জানিয়েছে কেন্দ্র কর্র্তৃপক্ষ। এছাড়াও অসদুপায়ে ব্যবহৃত ১৫টি স্মার্ট ফোন জব্দ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে রাখা হয়।
অন্যদিকে আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল। এসময় গেল বছর অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর উল্লেখ করে সিট নির্ধারণ না করায় দুই শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়।
তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্র সচিব মাওলানা শামছুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসার এক পরীক্ষার্থীসহ মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থী বহিস্কার এবং ৫ জন শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ কেন্দ্রে এ বছর ৫৩৫ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: