খাবারের সন্ধানে খ্রিষ্টান মিশনে ঢুকে তান্ডব বন্যহাতির

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি | ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ২২:০৩

খাবারের সন্ধানে খ্রিষ্টান মিশনে ঢুকে তান্ডব বন্যহাতির
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকায় বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে বসতবাড়ি তছনছ করেছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) উপজেলার বারমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লী ও ডালুকেনা গ্রামে রাতব্যাপি তান্ডব চালায় বন্যহাতির দল।
 
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, ক্ষুধার্ত ২০/২৫ টির বন্যহাতির দল বুধবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বারমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লীতে ঢুকে পড়ে। এতে হাতির দলটি কলাবাগানের কলাগাছ খেয়ে সাবার করে। হাতির তান্ডব থেকে বাঁচতে ধর্মপল্লীর লোকজন ডাকচিৎকার করে পটকা ফুটিয়ে ও মাশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়ায়। পরে ওই হাতির দলটি শেষ রাতের দিকে পাশের ডালুকোনা গ্রামে তান্ডব শুরু করে। এসময় ওই গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মিতালি ঘাগড়ার একটি বসতঘর ও রান্নাঘর ভেঙ্গে ওই ঘরে ঢুকে সেখানে রাখা বস্তাভর্তি চাল খেয়ে সাবার করে হাতিরদল।
 
মিতালি ঘাগড়া জানান, ক্ষুধার্ত হাতিগুলোকে বাঁধা দিতে গেলে মানুষকে প্রাণে মেরে ফেলতে তেড়ে আসে তারা। পরে গ্রামবাসীরা মিলে হৈ-হুল্লোড় করে ও ডাকচিৎকার করে হাতি তাড়ানো হয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা লিটন ডেবিট হাজং বলেন, এক সময় গারো পাহাড়ের প্রাকৃিতক বনে লতাগুল্ম আর পাহাড়ি ফলমূলে ভরপুর ছিল। ওসব লতাগুল্ম আর ফলমূল খেয়ে হাতি জীবন ধারন করতো। এখন সেই প্রাকৃতিক বন কেটে সামাজিক বনায়ন সৃজন করা হয়েছে। তাই পাহাড়ে পর্যাপ্ত খাবার খেতে না পেরে ক্ষুধার্ত হাতগুলো পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে খাবারের সন্ধানে তান্ডব চালাচ্ছে। এজন্য সরকারের একটি স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন।
 
বারমারী খ্রিষ্টধর্মপল্লীর পালপুরোহিত রেভারেন্ড ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন, গতকাল বুধবার মাঝরাতে বন্যহাতির পাল মিশন কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে কলাবাগানের কলাগাছ খেয়েছে। আসলে বনে খাবার না থাকায় ক্ষুধার্ত হাতিগুলো মাঝে মধ্যেই মিশন এলাকায় ঢুকে পড়ছে। সরকার যদি গারো পাহাড়ে হাতির খাদ্যের ব্যবস্থা করতো তাহলে হাতিও শান্তিতে থাকতে পারতো মানুষের জানমালও নিরাপদ থাকতো।
 
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, হাতির তান্ডব থেকে বাঁচতে এলাকার মানুষজনদের বনবিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একইসাথে বন্যহাতি মানুষের দ্বন্ধ¦ নিরসনে সরকার নানা মুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বন্যহাতিকে বাঁচাতে ও মানুষের জানমাল রক্ষা করতে কাজ করে যাচ্ছে বনবিভাগ। এজন্য সবাইকে সচেতন হয়ে সর্তক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: