শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। মাঘ মাসের এই কনকনে হাড়ভাঙ্গা শীতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে ভারত সীমান্তবর্তী এই উপজেলায়। একটানা তীব্র শীতের কারনে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে যোগদান করতে না পারায় ব্যাপক কষ্টে পড়েছেন। বিশেষ করে গারো পাহাড়ি গ্রামগুলো রাতের বেলায় ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।
দিনের বেলায় বয়ে চলে হিমালয়ের হিম শীতল বাতাস। বেলা ১১/১২ টার আগে সুর্যের দেখা পাওয়া যায় না। বর্তমানে রাতে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি আর দিনের বেলায় ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রিতে উঠানামা করছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কর্মরত শ্রমিকরা। জীবিকার তাগিদে তারা ভোরের কুয়াশার চাদর ঠেলে ভোর ৬টার দিকে বন্দরের পাথর ভাঙ্গার কাজে যোগদান করছেন। শীতার্তরা অনেকেই খরকুটার আগুন তৈরি করে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ ভীড় করছেন পুরাতন শীতের কাপড়ের দোকানে। চলমান শৈত্য প্রবাহের কনকনে শীতে গৃহপালিত পশুপাখির অবস্থাও বেহাল। এদেরকে ছালা বা বস্তার চট পরিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। শীতের তান্ডবে এসব এলাকায় সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে। শীতার্ত মানুষ যেন নিরব নিঃস্তব্দ হয়ে গেছে।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুজন মিয়া বলেন, নাকুগাঁও স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিক রয়েছে প্রায় ৪ হাজার। এরমধ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক এই বন্দরে পাথর ভাঙ্গার কাজ করেন। বন্দরটি সীমান্তর্তী পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এখানে ভারতের হিমালয় পর্বতের হিম শীতল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারনে অন্যান্য এলাকার চেয়ে বন্দর সংলগ্ন এলাকার মানুষ শীতে কষ্ট করছে বেশি। তিনি বলেন, বন্দর শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে শীতবস্ত্র হিসেবে কোন কম্বল পাননি। তাই স্থলবন্দর শ্রমিকদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কম্বল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য তিনি দাবি জানান।
জানতে চাইলে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ২৪০ টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বাকি কম্বলগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া শীতার্তদের জন্য নতুন করে আরও কম্বল বরাদ্দ পেতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: