শেরপুরের শস্য ভান্ডারখ্যাত নালিতাবাড়ীতে তৈল জাতীয় ফসল সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। কম খরচে বেশি ফলন হওয়ায় সরিষা চাষের আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। আমন ফসল ঘরে তোলার পর ওই জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন তারা। উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বির্স্তীন ফসলের মাঠ জুড়ে এখন যেন হলুদের সমারোহ।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় তৈল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে কৃষকরা এ বছর ২ হাজার ১৭৩ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বারি- ১৪ জাত ও দেশী জাতের সরিষা রয়েছে। ইতোমধ্যে সারামাঠ হলুদে ছেঁয়ে গেছে। মাঠে মাঠে মৌ মৌ গন্ধে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছিরা। এতে আশায় বুক বাঁধছেন কৃষকরা। নতুন সরিষা উত্তোলণের পর আবার তারা ওই জমিতে বোরো ধান আবাদ করবেন।
কৃষি বিভাগের লোকজন প্রতিদিন খোঁজখবর নিচ্ছেন ও কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন। আর কিছুদিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলবেন কৃষকেরা। এখন সারা গ্রাম যেন হলুদে ছেঁয়ে গেছে। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ক্যামেরা বন্ধি করতে উৎসুক মানুষ ছুটে যাচ্ছেন সরিষা খেতে।
উপজেলার নালিতাবাড়ী ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক মো. ফারুক মিয়া বলেন, সরিষা চাষে খরচ অনেক কম। দাম বেশি হলে আমাদের জন্য ভালো হবে। বিগত বছরের থেকে এ বছর একটু বেশি ভালো ফলন হবে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে অবশ্যই ফলন ভালো হবে এবং আমি লাভবান হবো।
মরিচপুরান ইউনিয়নের গুজাকুড়া গ্রামের কৃষক দৌলত হোসেন বলেন, গেল বছর ১ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়েছে। গেল বছর সরিষার ফলন ভালো ছিল, দামও ভালো পেয়েছিলাম। আশা করি এবারও সরিষার ভালো ফলন হবে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন বলেন, উপজেলার ৯ হাজার ৬শ জন কৃষকের মাঝে ভালো মানের বীজ ও সার বিতরণ করেছি। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। নালিতাবাড়ীতে এমন সরিষার আবাদ হওয়ায় আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে নালিতাবাড়ীর কৃষকরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: