ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত জেঁকে বসেছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। সেইসাথে বাড়ছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই আসছে শিশুসহ সব বয়সী রোগী। রোগীদের ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ২০ শয্যার বিপরীতে ৩৮ জন রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছে। এরমধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগ রোগী শিশু। এছাড়াও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এমন রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স হালিমা খাতুন জানান, 'শীতে বেশীর ভাগ রোগী আসছে শিশু ও পঞ্চাশর্ধ ব্যাক্তি। শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া এবং বৃদ্ধরা এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসছেন। শয্যা সংখ্যা কম থাকায় রোগীদের মেঝেতেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল, দুপুর এবং বিকেল এই তিন সময়ে রোগী ভর্তির হিসেব করা হয়। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন রোগী ভর্তির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
সাদুল্লাপুরের বনগ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু আব্দুল্লাহর মা নার্গিস আক্তার জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে আমার ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। হাসপাতালে ২ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর আমার ছেলে এখন কিছুটা সুস্থ্য।
সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাসিন্দা শিশু হাসিনা আক্তারের মা নিলুফার ইয়াসমিন জানান, 'হটাৎ করেই গতকাল থেকে আমার মেয়ের বমি এবং পাতলা পায়খানা শুরু হয়। সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার এসে ঔষধ এবং স্যালাইন দিয়ে গেছেন। তবে, এখানকার পরিবেশ খুব নোংরা'।
বেডে জায়গা না পেয়ে সিঁড়ির এক কোণে মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে শুয়ে আছেন মা লিজা বেগম। তিনি জানান, 'ঠান্ডার কারণে তার মেয়ের বুকে সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক বলেছেন, নিউমোনিয়া হয়েছে'।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা. মো. লেলিন বলেন, 'শীতে ঠান্ডাজনিত রোগী হাসপাতালে বেশী ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, সহকারী মেডিকেল অফিসার, নার্স ও মিডওয়াইফরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শিশুদের যাতে ঠান্ডা জনিত রোগ না হয়, সেজন্য মায়েদেরকে শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। গরম কাপড়ের পাশাপাশি বিশুদ্ধ গরম পানি খাওয়াতে হবে। রোগীদের সেবা দিতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: