নারী, মদ, তাস এই তিনে সর্বনাশ। আজ থেকে জেলায় এসব বন্ধে রুদ্ধদ্বার অভিযান চলবে। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশকে ভিন্ন রকমের পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নবাগত পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন।
হবিগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলি হয়েছেন পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন। সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার কার্যালয় সভা কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জেলার ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সকল সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, বিপিএম-সেবা সাংবাদিকদের মতামত এবং বক্তব্য অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেন।
পরে তিনি তার বক্তব্যের শুরতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানয়ক ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান স্থপতি, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে শহিদ জাতির বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহিদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
একই সাথে ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদ সকল পুলিশ সদস্যসহ ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো দুই লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
নবাগত পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। সমাজের বিভিন্ন অসংগতি এবং আইন-শৃঙ্খলা অবনতি সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো সাংবাদিকদের রির্পোটের মাধ্যামে উঠে আসে। পুলিশ এবং সাংবাদিকরা একত্রে হবিগঞ্জ জেলা তথা দেশের কল্যাণে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে। পুলিশ এবং সাংবাদিকদের পারস্পারিক হৃদ্যতার ভিত্তিতে কাজ করে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, মাদক মুক্ত সমাজ, সন্ত্রাস মুক্ত, যানজট মুক্ত এবং সর্বপুরি ফৌজদারি অপরাধ মুক্ত একটি সুখী ও সুন্দর হবিগঞ্জ জেলা উপহার দিতে পারে। জেলা পুলিশও এ ব্যাপারে বদ্ধ পরিকর।
সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন পুলিশ সদস্যেদের নানান ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে পুলিশ সুপারকে অবগত করলে তিনি তদন্ত তরে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
কয়েকজন সাংবাদিক হবিগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার সদ্য বদলীকৃত এসআই অভিজিৎ ভৌমিক (বর্তমানে এপিবিএন ঢাকা), বর্তমানে কর্মরত এসআই রিয়াজ উদ্দিন, পুলিশ সদস্য আনিসুর রহমান, আলিম খান ও হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই মুমিনুল ইসলামের নামে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ওই সকল পুলিশ সদস্যরা জেলায় এমন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করেন নি বলে অভিযাগ করেন।
ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, জুয়া খেলা পরিচালনা, বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে এনে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় সহ একাধিক অভিযোগ করেন।
পরে নবাগত পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন-বিপিএম সেবা সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাদকের বিরুদ্ধের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে জেলা পুলিশের নতুন এই অভিভাবক বলেন, আমার কোন পুলিশ সদস্য যদি মাদক সেবন, পরিবহণ বা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় তিনি মাদককে সকল অপরাধের মা-বাবা উল্লেখ করে বলেন, মাদক বন্ধ হলে সমাজের অর্ধেকের বেশি অপরাধ কমে যায়। মাদক সেবীরা টাকার জন্য চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুন কারাপি সহ যে কোন ধরনের অপরাধ করে বসে। মাদকের নেশায় তাদের মস্তিষ্কে কাজ করে না। তাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের বিকৃতি চলে আসে। আর ওই সময় সে যে কোন ধরনের অপরাধ করতে দ্বিধা করে না। আজ থেকে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ হবে এক ভিন্ন রকমের পুলিশ বলে ঘোষণাও দেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: