মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষে বাকরুদ্ধ নৌকার শাহজাহান

গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৭

মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষে বাকরুদ্ধ নৌকার শাহজাহান

মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষে অঝোরে কাঁদলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।

রোববার বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন তিনি।

পরে সাংবাদিকদের বলেন-৪৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি দলের বাইরে একটি পা ফেলিনি। দলের অবাধ্য হইনি। আজকে জাতীয় স্বার্থে, আমাদের দল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জাতির বৃহৎ স্বার্থে আমি আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছি। আপনারা জানেন মাত্র কয়েকদিন আগে ইতিহাস গড়ে ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম আমি নৌকাকে বিজয়ী করেছিলাম। ২৯ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে সাবেক ২ বারের এমপিকে পরাজিত করেছিলাম। এবার আমার ভোটের পরিমান কয়েকগুন বেড়ে যেতো। সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষ প্রাণের চেয়েও আমাকে বেশি ভালোবাসে।

তার জন্যে দলের নেতাকর্মীদের পরিশ্রমের বর্ননা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি শিশুর মতো কেঁদে উঠেন। তিনি আরো জানান দলের পরবর্তী নির্দেশনা অনুসারেই কাজ করবেন তিনি।

আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই আসনে গত ৫ ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। এরপর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয় তাকে। কিন্তু এই আসনটি জাতীয় পার্টি বা ইসলামী ঐক্যজোটকে ছেড়ে দিতে পারে আওয়ামী লীগ-এমন আলোচনা চলছিলো বেশ ক’দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে।

শাহজাহান আলম সাজু ছাড়াও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাকের পার্টির আরো ১০ জন প্রার্থী। তারা হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের একই দলের তারেক মো: আদেল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের জাসদ প্রার্থী আক্তার হোসেন সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কাজী মাসুদ আহমেদ এবং জাকের পার্টির ৬টি আসনের প্রার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১(নাসিরনগর) আসনের মো: জাকির হোসেন চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ব্রাহ্মনবাড়িয়া-৩(সদর ) আসনে মো: সেলিম কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪(কসবা-আখাউড়া) মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫(নবীনগর) মো: জামসেদ মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর ) আবদুল আজিজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এডভোকেট আক্তার হোসেন সাঈদ বলেন- যেহেতু ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাইনি সে কারনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। তবে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীর সাথে থাকবো। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু এবং প্রতিযোগিতামূলক হয় সেদিকেই আমাদের খেয়াল থাকবে। ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে আসে সেব্যাপারে আমার সহযোগিতা এবং তৎপরতা থাকবে।

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির এডভোকেট কাজী মাসুদ আহমেদ বলেন-সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এবং আমার ব্যাক্তিগত কিছু কারনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। জেলা কমিটির সিদ্ধান্তেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। তবে আমরা জোটগত এবং দলীয় ভাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছি। বিভিন্ন জেলায় আমাদের প্রার্থী রয়েছে। এরবাইরে নৌকা প্রতীক নিয়ে জোটগত ভাবে আমাদের ৩ জন নির্বাচন করছেন। বাকীরা হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর