যথাযোগ্য মর্যাদায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় কালো ব্যাজ ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শোক র্যালি শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। র্যালি শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্তের সঞ্চালনায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, 'যারা জাতি গঠনে জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা এখানে এসেছি। আমরা বিজয় দিবসে বিজয় উৎসব পালন করি। কিন্তু যাদের কারণে আমাদের বিজয় তাঁদেরকে আমরা ভুলে যাই। যাঁরা জ্ঞান চর্চায় অবদান রেখেছিলেন তাঁরা বুদ্ধিজীবী। জাতিকে মেধা শূন্য করার জন্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, 'শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। পাক হানাদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলার সূর্য সন্তানদের হত্যা করে। স্বাধীনতার পর যাঁরা বাঙালিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাঁদেরকে হত্যা করে। এই হত্যাযজ্ঞের পিছনে রয়েছে বাঙালিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে না দেয়ার বিশাল ষড়যন্ত্র। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শকে ধারণ করতে পারলে সত্যিকার অর্থে আমরা সোনার বাংলা গড়তে পারব।'
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সদয় ছিলেন। বুদ্ধিজীবীদের যে ত্যাগ, আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। জাতীয় সংগীত আমরা কষ্ট করে অর্জন করেছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকেই জাতীয় সংগীত গায় না। দেশকে ভালোবাসি শুধু মুখে না বলে কাজে কর্মে দেখাতে হবে। বাহ্যিকভাবে এ দিবস পালন না করে অন্তরে ধারণ করা উচিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, দেশের বাইরেও বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।'
অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহ.আমিনুল ইসলাম আকন্দ বলেন, 'বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার মূল প্রতিপাদ্য ছিল দেশ যেনো এগিয়ে যেতে না পারে। বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নেতৃত্বে বুদ্ধিজীবীরা সংগঠিত হয়। একসাথে তাঁরা তাদের রাষ্ট্রীয় চিন্তা ভাবনাগুলো প্রকাশ করে জাতি গঠন করেন।'
এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহা: হাবিবুর রহমান, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম মাওলা, প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মো.তোফায়েল হোসেন মজুমদার, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের প্রাধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান, শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান, প্রত্নতত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন, আইসিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাইফুর রহমান, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান মিলকী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কমরচারীরা।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: