প্রতিনিয়ত লাখ লাখ বেকার যুবক ছুটে চলছে চাকরির পেছনে,কিন্তু চাকরি পাচ্ছেনা।প্রত্যাশিত চাকরি যেন সোনার হরিণ। অনেক চাকরির পেছনে ছুটেছে মামুন। উপায়ান্তর না পেয়ে বেছে নিয়েছে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ,পত্রিকা বিক্রি। আর এটা থেকেই জীবন সংগ্রামে সাবলম্বী হতে চায় সে।
বলছি পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ডের চোকদারপাড়া এলাকার মৃত খালেক বিশ্বাসের ছেলে মামুন হোসেনের কথা।
এস.এস.সি পরীক্ষার আগেই বাবা মারা যান। এক বোন দুই ভাই,এর মধ্যে মামুন বড় । ছোটবেলা থেকেই মামুন ছিল খুবই পরিশ্রমি মেধাবি। সাংসারিক কাজসহ বাবার মাঠের কাজেও সহযোগিতা করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর সে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়া অবস্থায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে সাঁথিয়ার বনগ্রাম বাজারে খন্দকার পত্রিকা বিতাণের সাঁথিয়া উপজেলার পত্রিকা পরিবেশক হিসেবে কাজ শুরু করে। কঠোর পরিশ্রম,অদম্য ইচ্ছে শক্তি ও কাজের প্রতি ভলোবাসা দেখে দৈনিক আজকের পত্রিকার ১৫ কপি পত্রিকার এজেন্ট দেয়া হয় তাকে। চাকরি নয়,আতœকর্মসংস্থানের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে সেই ১৫ কপি পত্রিকা নিয়ে কাজ শুরু করে। তার কথা ব্যাবহারে সঠিক সময়ে পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছে দেওয়ায় দিন দিন পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তার পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি মামুনকে। পাঠকের চাহিদার কথা ভেবে এজেন্সি করার জন্য বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ শুরু করে দেন । কিন্তু এজেন্সি পাওয়াটা খুব সহজ ছিলনা। অনেক চরাই উতরাই পার করতে হয়েছে তাকে। অনেক সময় পত্রিকা অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন,এখন এজেন্ট দেয়া হবে না বা নতুন এজেন্ট দিবেন না। তবুও হাল ছাড়েনি সে। আবার অনেকেই তরুণ পরিশ্রমি ভেবে এজেন্সি দিয়ে দিয়েছেন। ধীরে ধীরে দৈনিক আমার সংবাদ,নয়া শতাব্দী, সমকাল, ভোরের ডাক,ভোরের কাগজ, আমাদের সময়, যুগান্তর, কালবেলা, আলোকিত বাংলাদেশ, সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, সংবাদ, জনকণ্ঠ, সময়ের আলো, মানবজমিন এবং প্রতিদিনের বাংলাদেশ সহ, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, চাকরির বিজ্ঞাপন, চাকরির সংবাদ, চাকরির ডাক ও মাসিক মদিনার এজেন্ট হয়ে যায়। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা মিলে এখন তার পাঠক, গ্রাহকের সংখ্যা সহস্রাধিক।
মামুন জানায়,পাঠকের সেবা ও চাহিদাটাই তার কাছে মুখ্য বিষয়।এ পেশায় এসে ছোট ভাইকে লেখাপড়া করাচ্ছেন । মা,ছোট ভাই,স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে শুখে দিন কাটছে তার। পাঠকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দৈনিক প্রথম আলো ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার এজেন্সি পেলে আরও ভালোভাবে পাঠকের সেবা দিতে পারবে।এ দুটি পত্রিকা তার না থাকায় পাঠকের মনের মতো সেবা দেওয়া একটু বিঘœ ঘটছে। যেহেতু এ দুটো ছাড়া প্রায় সকল পত্রিকার এজেন্সি পেয়েছে,এই দুটি পত্রিকার এজেন্সিও খুব শীঘ্রই পাবেন বলে আশা করছেন।
মামুন হোসেন আরও বলেন,প্রতিটা মানুষেরই নিজের বলার মতো একটি গল্প থাকতে হবে। আর এই গল্পটা তৈরির জন্য আমি এই কাজটা সাহস করে শুরু করি। কাক ডাকা ভোর কিম্বা তীব্র শীতের কুয়াশামাখা সকাল,রোদ,ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজটাকে ভালোবেসে লেগে আছি। সাফল্য আসবেই ইনশাআল্লাহ ।
সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মানিক মিয়া রানা ও সাধারণ স¤পাদক আ: হাই বলেন,শিক্ষিত যুবক মামুন চাকরির পেছনে না ছুটে সংবাদপত্র বিক্রি শুরু করে এখন ধীরে ধীরে সে নিজেই পত্রিকার এজেন্ট হয়ে গেছে। প্রথম দিকে এ ব্যাপাওে তাকে উৎসাহ ও সহযোগিতা করা হয়েছে।আমরা তার সাফল্য কামনা করছি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: