পাবনা-৪ আসনে নিজে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেবার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও মেগা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে।
ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত পাবনা-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী পুত্র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গালিবুর রহমান শরীফ।
এই আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম। তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নৌকার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পাঞ্জাব আলী বিশ্বাসকে। এ ঘটনা নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন আসলেই বসন্তের কোকিলের মতো এলাকায় এসে ভীড় জমান কেন্দ্রীয় আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের এই নেতা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম। মনোনয়নের জন্য নানা লবিং তদবিরে ব্যর্থ হয়ে প্রতিবারই নিজ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, মনোনয়ন না পেয়ে নিজ অর্থ খরচ করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফের বিপক্ষে প্রার্থী দিয়েছেন তৎকালীন জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পাঞ্জাব আলী বিশ্বাসকে।
পাবনা-৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা দাবী করেন, মনোনয়ন চাইবার স্বাধীনতা আছে যে কারও। দল যাকে মনোনয়ন দেবেন, দলের একজন খাদেম হিসেবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি মনোনয়ন না পেয়ে জনৈক এক শিল্পপতি কালো টাকা উড়িয়ে দলীর প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নিজ অর্থ খরচ করছেন। যা দলের সাথে রীতিমতো বেঈমানীর সামিল বলে দাবী তাদের।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস বলেন, কারো উস্কানীতে আমি নির্বাচনে আসিনি। আমি আমার অবস্থান থেকে প্রার্থী হয়েছি। অন্যান্যদের মতো মনোনয়ন বঞ্চিতরাও আমার পাশে থাকবে বলে বিশ্বাস করি।
এ ব্যাপারে মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম বলেন, দলের প্রার্থী নির্ধারণে ভুল আছে। একজন প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিককে আমরা প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারিনা। দীর্ঘদিন ধরে নৌকার প্রার্থীর পরিবার প্রভাব ও সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। আবার সেই পরিবারের বিদেশে অবস্থানকারী ছেলেকে অর্থের বিনিময়ে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসলে আমরা এলাকায় ভিড়তে পারবো বলে মনে হয় না। পূর্বের সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হবে এ নির্বাচনী এলাকা।
আব্দুল আলিম অভিযোগ করে বলেন, লন্ডনে স্থায়ী নাগরিক গালিবুর রহমান শরীফ টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রের নীতি নির্ধারকদের দিয়ে এই মনোনয়ন হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের কালো টাকার কাছে আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মিরা অসহায় হয়ে পড়েছি।
এ বিষয়ে নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফের মুঠো ফোনে কল দিয়ে ও হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে তার ব্যক্তিগত সহকারী বুলবুল হোসেন বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দিবে দলের লোকজন তার পক্ষেই কাজ করবেন এটাই স্বাভাবিক। নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে কে বা কারা অপপ্রচারে নেমেছে তা আমরা জানি। সত্য মিথ্যা তারাই যাচাই করুক।
গালিবুর রহমান শরীফের একাধিক আস্থাভাজন নেতাকর্মিরা বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের নিজেই বলেছেন, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন মনোনয়ন না পাওয়া নেতা যদি তার ইন্ধনে কোন প্রার্থী দিয়ে কাজ করে প্রতিবদন্ধকতা সৃষ্টি করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল টিম তাদের অনুসন্ধান ও তালিকা তৈরী করছেন। সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: