নৌকা যারা পলাইবার জায়গা পাবে না : সিরাজ চেয়ারম্যান 

আশিকুর রহমান, নরসিংদী প্রতিনিধি | ৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০০

নৌকা যারা পলাইবার জায়গা পাবে না : সিরাজ চেয়ারম্যান 
মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘নৌকা যারা পলাইবার জায়গা পাবে না। নৌকার প্রার্থী হিরো পলাইবার জায়গা পাবে না'। তিনি আরও বলেন, আজ থেকে দক্ষিণাঞ্চলে ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ব্যাপক জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে। কামরুল ভাইয়ের জন্য নামছি। এখানে কারও বাঁধার সৃষ্টি হবেনা। এখন হিরো'র লোকেরা পলানোর সুযোগ পাবে না। আমরা প্রত্যেকে কামরুল ভাইয়ের জন্য মাঠে নামবো (ইনশাআল্লাহ)। যতই প্রগান্ডা করুক, নৌকা যারা পলাইবার জায়গা পাবে না।
 
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নরসিংদী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে মাধবদী পৌরসভার হল রুমে মাধবদী পৌর পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
 
ইতোমধ্যে সিরাজুল ইসলামের বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে আওয়ামী লীগের নৌকার বিরুদ্ধে কথা বলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা বইছে। জেলা জুড়ে চলছে নিন্দার ঝড়। 
 
সিরাজুল ইসলাম মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও পাইকারচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। 
এ বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 
পরে মাধবদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র এবং মতবিনিময় সভার সভাপতি মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। তাই নৌকার বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ নেই। নৌকার লোকেরা পালানোর জায়গা পাবে না বক্তবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কখন এই কথা বলেছে, তা আমি শুনিনি।
 
তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও নৌকার বিরুদ্ধে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও একাধিক সহযোগি সংগঠনের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন বক্তব্যে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। নৌকা মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক, স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীক। এই প্রতীকের মাঝে লুকিয়ে আছে বঙ্গবন্ধু'র প্রতিকৃতি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে যারা নৌকার বিরোধিতা করছে তারা দল ও স্বাধীনতার শত্রু। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে দীর্ঘ ৪৫ বছর আওয়ামী রাজনীতি করে আসছি। দল থেকে কি পেলাম কি পেলাম না সেটা বড় কথা নয়। দল বা নৌকার বিরোধিতা আজও পর্যন্ত করিনি। দলের দায়িত্বশীল পদে থেকে কিভাবে নৌকার বিরোধিতা করে তা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
 
নৌকার সমর্থন করা একাধিক ব্যক্তি বলেন, দলের শীর্ষ পদে থাকা নেতার বক্তব্য যদি এমন হয়, তাহলে কোথায় যাবে কর্মীরা। তার এই বক্তব্যে দলের সাধারণ কর্মীরা আজ হতাশ। আমরা দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধু'র কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি এসব অযোগ্য ব্যক্তিদের দল থেকে বহিষ্কার করে যোগ্য লোকের হাতে দলের দায়িত্ব দেওয়া হোক। তাহলেই দল থাকবে নিরাপদ এবং কর্মীরা পাবে মূল্যায়ন।
সম্প্রতি, গত ২৯ নভেম্বর নরসিংদী সদর-১ আসনের নৌকা প্রার্থীর মতবিনিময় সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উদ্দেশ্য " মাইরের উপর ঔষধ নাই" বলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন বক্তব্য প্রদান করেন।
 
তার বক্তব্যটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর পরিপন্থী বলে  বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় ছাত্রলীগ সভাপতি রিমনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। 
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওমর ফারুকের করা মামলায় শুক্রবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। বর্তমানে ছাত্রলীগের এই নেতা কারাগারে আটক রয়েছেন। 
 
 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: