ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আফসানা হক সাথী (৩০) নামে এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী ইমরান খান সবুজকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। গত সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। তবে এ মামলার বাকি ৫ আসামির জামিন হয়েছে। ইমরান জেলার আখাউড়া উপজেলার রিসোর্স সেন্টারের কম্পিউটার অপারেটর।
সাথীর মা রাশিদা আক্তার ৬ জনকে আসামি করে গত ১০ই নভেম্বর সদর মডেল থানায় তার মেয়েকে হত্যার অভিযোগ দেন। এই মামলায় গত ২১শে নভেম্বর হাইকোর্টে আগাম জামিন প্রার্থনা করে আসামিরা। উচ্চ আদালত তাদের জামিন না দিয়ে ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হতে বলে। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ কে এম আশরাফুল আলম জানান, উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক গত সোমবার মামলার ৬ আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। তাদের মধ্যে ইমরান খান সবুজকে কারাগারে প্রেরণ করার আদেশ দেয় আদালত এবং বাকি ৫ আসামির জামিন মঞ্জুর করে। মামলায় অভিযোগ করা হয় সবুজ তার বাড়িতে ঘর নির্মাণ করার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা এনে দিতে বললে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয় তার। টাকা না পেয়ে একপর্যায়ে সাথীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করে সবুজ।
এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ-দরবার হয় দু’পক্ষের। গত বছরের ২২শে নভেম্বর এক সালিশ সভার পর সবুজ স্ত্রীকে কোনো রকম নির্যাতন করবে না বলে লিখিত অঙ্গীকার করে। এরপর কিছুদিন ভালোভাবে চলার পর সবুজ পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আবার শুরু হয় তার স্ত্রী নির্যাতন। বিভিন্ন সময় সবুজের মা এবং অন্য স্বজনরা সাথীকে অপমান-অপদস্থ করে বিষ খেয়ে মরে যাওয়ার প্ররোচনা দেয়। এরই জেরে গত ১১ই নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় কেরির ট্যাবলেট খেয়ে ফেলে সাথী। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১১টায় মারা যায়। এ ঘটনায় সাথীর মায়ের দায়ের করা মামলায় সবুজ ছাড়াও আসামি করা হয় তার পিতা মো. আলী হায়দার খান (৬৪), মা মাফিয়া বেগম (৫৫), বোন শেফালী খানম শেফালী (৩২) ও তার স্বামী মো. আল আমিন হাসান (৪১) ও আনিস নামে আরেকজনকে। বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সবুজ আর আশুগঞ্জের সোনারামপুরের সাথীর বিয়ে হয় ২০১১ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর। আরিয়ান (১০) ও আদুরি (৬) নামে দুটি সন্তান রয়েছে তাদের।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: