লাইসন্সে নেই, তাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ইউএনও তারপরেও সেই ইটভাটা চলছেই। এ নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায়। এ উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে অবস্থিত ইটভাটাটির সত্বাধিকারী সম্প্রতি ইট পোড়ানো শুরু করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহেশপুর আর এম এস বিক্সের ইট পোড়ানোর কাযর্ক্রম চলছে। শ্রমিকরা আগুন ধরে রাখার জন্য কয়লা ব্যবহার করছে। পাশেই ভাটার শ্যালোমেশিন চলছে। ওই ইটভাটার কয়েকজন শ্রমিক বলেন,ভাটা চালু হয়েছে শনিবার। ইউএনও এসেছিল ইটভাটার অনুমোদন না থাকায় জরিমানা করেছে। তবে ইটভাটা বন্ধ করতে বলেননি।
উপজেলার মোট ২৬টি ইটভাটার মধ্যে রাণীশংকৈল পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানের মালিকানাধীন এম এম বি বিক্স ও মহেশপুর এলাকার আর এম এস বিক্স ইটভাটায় আগুন দিয়ে ইট পোড়ানোর কাযর্ক্রম শুরু হয়েছে। অন্যগুলো এখনো শুরু করেনি।
উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, ওই দুটি ইটভাটাসহ উপজেলার প্রায় ২৬টি ভাটার কোনটির লাইসেন্স নেই।
জানা গেছে. গত শনিবার রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান উপজেলা মহেশপুর এলাকার আরএমএস বিক্স ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এতে ইটভাটার লাইসেন্স না থাকার অপরাধে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে তিনি ওই ইটভাটায় জরিমানা করলেও ইটভাটাটির ইট পোড়ানোর কাযর্ক্রম এখনো বন্ধ হয়নি।
এ নিয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন,ইটভাটাটি যদি এখনো চলমান থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সে ব্যবস্থা আজ সোমবার পযর্ন্ত তিনি নেননি।
এদিকে ইটভাটাটি বন্ধের দাবী জানিয়েছেন মহেশপুর এলাকায় অবস্থিত ভিএফ নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিনুর রহমান ও একই এলাকার দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ আবুল কালাম। তারা বলেন, বর্ষার সময় রাস্তা কাদাঁমাটিতে ভরে যায়। ইটভাটার ধোয়ায় অনেক সমস্যা হয়্। তাছাড়া ইটভাটায় ব্যবহৃত বিভিন্ন শ্যালোচালিত মেশিনের শব্দের জন্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। তাই তারা ইটভাটাটি বন্দের দাবী জানিয়েছেন।
এদিকে ওই এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য খালেদুর রহমান বলেন, ইউএনও এসে লাইসেন্স না থাকার জন্য জরিমানা করলেও লাইসেন্সহীন ইটভাটাটি এখনো চলমান। সাবেক ইউপি সদস্য আরো বলেন, লাইসেন্স নেই এ জন্য ইউএনও জরিমানা করলো। অথচ ইটভাটাটি এখনো চলে কি করে? তিনি প্রশাসনের কাছে এটি বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেই। তা হলে আমরা এলাকাবাসী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দারস্থ হবো।
আর এম এস বিক্সের সত্বাধিকারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুলতান বলেন, ইউএনও এসে জরিমানা করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমিত সাপেক্ষে ইটভাটায় আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাটার লাইসেন্স নেই প্রশ্নে বলেন, কোন ভাটারই তো লাইসেন্স নেই ওগুলো কিভাবে চলবে?
রাণীশংকৈল পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,নিয়ম মেনেই ইটভাটা চালু করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, কোন ইটভাটায় আগুন দিয়ে ইট পোড়ানোর কার্যক্রম চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি। লাইসেন্সবিহীন কোন ইটভাটা যদি চলে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: