ময়মনসিংহে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব হত্যাকান্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
ডিসি মো: মোস্তাফিজার রহমানের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তারা। এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারকেও স্মারকলিপির অনুলিপি দেওয়া হয়।
এর আগে, সকালে নগরীর চায়না মোড় থেকে গ্রেফতারকৃত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবিতে প্রায় ১০ হাজার নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আসামিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে।
এ সময় নিহত রাকিবের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বলেন, সন্ত্রাসী শাওনসহ অন্যান্যরা আমার সন্তানকে এতিম ও আমাকে বিধবা করেছে। আমি আমার স্বামীকে আর কোন দিন ফিরে পাবোনা। কিন্তু আমি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নিহতের চাচা মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক সাগর বলেন, আমার ভাতিজা হত্যার ঘটনায় ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আদালতে হস্তান্তরের জোর দাবি জানাই।
মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও সাবেক চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম জাহাঙ্গীর বলেন, সন্ত্রাসী শাওন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা নিরীহ মানুষের উপর দীর্ঘদিন যাবত অত্যাচার করে আসছে। তাদের উপর বিভিন্ন মামলাও রয়েছে। কোন শাস্তি না হওয়ায় বারবারই ওঁরা পার পেয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাই এবার যাতে এই সন্ত্রাসীদের কঠোর শাস্তি হয় এবং আর যাতে কোন মায়ের বুক খালি না হয়। ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মন্ডল বলেন, রাকিব একজন নিরীহ ছেলে ছিল। এ হত্যাকান্ড আমরা চরাঞ্চলবাসি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ৩১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান জামাল, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহজাহান মুনির, ৩১, ৩২ ও ৩৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ফারজানা ববি কাকলি, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ.বি ছিদ্দিক, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মিন্টু, জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক আলী হোসেন, প্রচার সম্পাদক স্বপন মিয়া, জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের আহবায়ক শামসুল হক, যুগ্ন আহবায়ক বাবুল আক্তার, সদস্য ইদ্রিস আলী টাইগার, ৩১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের আহবায়ক ওসমান গনি, যুগ্ন আহবায়ক সেলিম উদ্দিন, ৩৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের আহবায়ক মোক্তার হোসেন, যুগ্ন আহবায়ক হেলাল উদ্দিন , জুটমিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য তুষার সরকার, ৩২ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: কাউসার আহমেদ, নিহত রাকিবের মা হাসি, ছোট্ট শিশু আয়ামসহ চরাঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত (১১ নভেম্বর) শনিবার রাত ৮টার দিকে নগরীর চায়না মোড় এলাকায় সন্ত্রাসী শাওন পারভেজ ও তার সহযোগীরা তাদের গাড়িবহরকে সাইড না দেওয়ায় এক ট্রাকচালককে মারধর করেন। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব তাদের বাধা দেন। পরে তাদের ওপরও হামলা করেন শাওন ও তাদের লোকজন। স্থানীয়রা আহত আব্দুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়াকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: