রাকিব হত্যা: শাওনসহ ছয়জনকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত

সাইফুল ইসলাম তরফদার, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি  | ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ২০:৩১

রাকিব হত্যা: শাওনসহ ছয়জনকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত
রাকিব-হত্যা-চার-দিনের-রিমান্ডে-শাওনসহ-ছয়জন ময়মনসিংহ নগরীতে রাকিব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জনকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
 
ময়মনসিংহ র‍্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাকিবকে হত্যার পর আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই দুইজনের পালিয়ে থাকার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
ময়মনসিংহ নগরীতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব নামে এক যুবক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জনকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
 
ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলী আদালতের বিচারক স্মরণিকা পাল শুক্রবার বিকেলে প্রত্যেক আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন মামলার প্রধান আসামি নগরীর সেহড়া চামড়াগুদাম এলাকার ইয়াছিন আরাফাত শাওন, তার ভাই মাসুদ পারভেজ, সানকিপাড়া এলাকার আনিছুর রহমান ফারুক, একই এলাকার মো. মানিক, মো. মবিন ও শান্ত।
 
 জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইয়াছিন আরাফাত শাওনের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা, মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা, আনিছুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা, মো. মোমিন ও মো. শান্তর বিরুদ্ধে ৩টি করে মামলা রয়েছে।
 
তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
 
এর আগে জেলার ত্রিশালের উজানভাটিপাড়া এলাকা থেকে শুক্রবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয় নগরীর পুরোহিত পাড়া এলাকার মো. প্রান্ত ও সেহড়া ডিবি রোড এলাকার রাহাতকে।
ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাকিবকে হত্যার পর আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই দুইজনের পালিয়ে থাকার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, মামলার প্রধান আসামি ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার ভাইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি।’
 
তিনি জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার কর্মীরা ফুলপুরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে হায়েস গাড়ি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরের ফিরছিলেন। পথে নগরীর চায়না মোড়ের টুলবক্স এলাকা পর্যন্ত আসতেই একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে হায়েস। ওই ট্রাকটি সাইড না দেয়ায় ওভারটেকের সময় হায়েস ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা ট্রাকচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান শাওন ও তার কর্মীরা। একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর শুরু করেন।
 
ওই সময় স্থানীয় বাসচালকসহ অন্যরা তাদের থামাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। এতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়া নামে তিনজন রক্তাক্ত জখম হন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত বলে জানান।
 
আহত দুজন হলেন সাদেক আলী ও শহিদ মিয়া। তারা বাসচালক ও হেলপার।
 
রাকিব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয়রা চায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের মা হাসি বেগম মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য শাওনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: