কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নিহত ও আহত স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। কারও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে হাত-পা। আবার কেউ কাতরাচ্ছেন মৃত্যু যন্ত্রণায়। আহতদের নেয়া হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে এ ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২১ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে প্রাথমিক সূত্রে জানা যায়। আর আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভৈরব জংশনের আউটার পয়েন্ট ক্রসিংয়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী ট্রেন এগারো সিন্দুর এক্সপ্রেসের শেষ তিনটি বগিতে সজোড়ে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামগামী কন্টেইনারবাহী আরেকটি ট্রেন। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় এগারো সিন্দুর ট্রেনের পিছনের সাড়ি কয়েকটি বগি। এ সময় চাপা পড়েন অনেক যাত্রী। শুরুতেই তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করেন স্টেশনে থাকা অপেক্ষামান যাত্রী ও স্হায়ীরা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। একে একে উদ্ধার করে আনা হয় বেশ কয়েকটি মরদেহ। গুরুতর আহত অনেককে নেয়া হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল আর যাত্রীবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল ভৈরব থেকে ঢাকায়। ভৈরব রেল স্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ তিনটি বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে গিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে বগির নিচে চাপা পড়ে অনেক যাত্রী। ভিতরে থাকা যাত্রীদের ডাক-চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে উঠে। এসময় উৎসুক জনতার ভিড়ে উদ্ধারকারীরা তাদের উদ্ধার করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। পরে আহতদের অটোরিকশা ও এম্বুলেন্সে করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্দুর ট্রেন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন আঘাত করে। এতে যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর পরই ঢাকার সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীর ট্রেন চলাচল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: