গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর।তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন শুক্রবার (২০ অক্টোবর)। কিন্তু এর আগেই আচরণবিধি ভঙ্গ করে রাতদিন সভা-সমাবেশ করে নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিয়েও ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি। সর্বশেষ রোববার (১৫ অক্টোবর) দিন গভীর রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরে মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরির একটি মাহফিলে অংশ নিয়ে মাইকে ভোট প্রার্থনা করেন অধ্যক্ষ সাজু। সেই মাহফিলের বক্তব্যের ভিডিও তিনি তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন।
শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আশুগঞ্জের মানুষ কোনোদিন নৌকা প্রতীক পায়নি। এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আশা করবো আগামী ৫ নভেম্বর নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবেন।’
ইসলামি বক্তা গিয়াস উদ্দিন তাহেরিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সাজু ভাইকে ভালোবাসি, আপনারা ভালোবাসবেন। আমার পরিবারও সাজু ভাইয়ের জন্য দোয়া করে। আপনাদের সন্তান আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন ভাইকে কবুল করেন।’
এর একদিন আগে উপজেলার নাওঘাট এলাকায় একটি মাহফিলে অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) মনোনয়ন বাছাই শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহগীর আলম প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আগামী ২০ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগে যেন কোনো প্রার্থী প্রচারণা না করেন।
কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তার এমন নির্দেশনার পরও সেদিনই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তন ব্যবহার করে নির্বাচনী সভা করেন। ওই সভা শেষে তিনি পাকশিমুলে একটি সভা করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক সভা করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী।
এ বিষয়ে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘উনার কর্মকাণ্ডগুলো আমার নজরে এসেছে। প্রতীক বরাদ্দের আগে এভাবে ভোট প্রার্থনা আচরণবিধির লঙ্ঘন। আমরা এগুলো দেখছি, অভিযোগ দাখিল করা হবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগে প্রকাশ্যে এভাবে ভোট চাওয়া ঠিক নয়।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বসাক বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিয়ে ভোট প্রার্থনার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুতে গত ৪ অক্টোবর মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ছয় প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী রাজ্জাক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (জুয়েল), আওয়ামী লীগের শাহজাহান আলম সাজু ও জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: