ফাঁসি বহাল, মহিউদ্দিনের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা

সময় ট্রিবিউন ডেস্ক: | ২৭ জুলাই ২০২৩, ১৯:১০

সংগৃহীত ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ফাঁসির আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। তার লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা। গ্রামের বাড়ির মসজিদের সামনে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশেই দাফনের জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন তার পরিবার।

মহিউদ্দিনের ফাঁসির খবরে যেন স্তব্ধ হয়ে গেছেন গ্রামবাসী। তার শতবর্ষী বৃদ্ধা মা কানে একদমই শুনতে পান না। তিনি এখনো জানেন না যে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই তার ছেলের ফাঁসি হবে। পরিবারের কেউ তাকে কিছু বুঝতেও দিচ্ছেন না। তবে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও অচেনা লোকজনের সমাগম দেখলেই তিনি জানতে চান কি জন্য এসেছে তারা।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিনের সঙ্গে কারাগারে পরিবারের লোকজন শেষ দেখা করেন মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত।

মহিউদ্দিনের চাচাতো ভাই ছিকু মিয়া বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের শেষ দেখা করার জন্য সময় দেন মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায়। আমরা সেখানে দেখা করেছি পাঁচজন। মহিউদ্দিনের স্ত্রী, ভাই আরজু মিয়া, বোন রিনা বেগম, আমি ও আরেক চাচাতো ভাই শাহিন মিয়া।

ছিকু মিয়া আরও বলেন, মহিউদ্দিন আমাদের বলেছেন, অধ্যাপক তাহের ছিলেন আমার বাপের সমতুল্য। তিনি আমাকে মানুষ করেছেন। প্রায়ই আমি তার বাজার-ঘাট নিয়ে দিতাম। তার হত্যাকাণ্ডে আমি নির্দোষ আমি কিছুই জানতাম না। আমি ন্যায় বিচার পেলাম না, আমি আল্লাহর কাছে এর বিচার দিলাম। তার স্ত্রীকে বলেছেন, যেহেতু এদেশে ন্যায় বিচার পেলাম না, জায়গা জমি বিক্রি করে আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যেও।

মহিউদ্দিনের ছোট ভাই আরজু মিয়া বলেন, আমরা আওয়ামী পরিবারের সন্তান, আমার ভাই ৪ নম্বর আসামি ছিলেন। ১ নম্বর ও ২ নম্বর আসামি তারা খালাস পেলেন অথচ আমার ভাইয়ের ফাঁসি বহাল থাকলো। আমার ভাই নির্দোষ ছিল বিধায় মামলা সম্পর্কে কোনো গুরুত্ব দেন নাই। আমার ভাই ভেবেছিল অন্যায় করি নাই ইনশাআল্লাহ খালাস পাবো। আমার ভাইয়ের রোষানলে পড়ে ফাঁসি হলো।

তিনি আরও বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের একটা চিঠি দিয়ে সেই চিঠি বাড়ি নিয়ে খুলতে বলেছিলেন, কিন্তু আমরা গাড়ির মধ্যেই চিঠিটি খুলে ভেতরে লেখা দেখি বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত ১০টা এক মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হবে। আমরা মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে পাঠিয়ে দিব, আপনারা শুধু অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া দিয়ে দিয়েন।

ওই গ্রামের যুবক রনি মিয়া জানান, আমরা শুনেছি মহিউদ্দিন চাচা জাপান, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া থেকে সোনার মেডেল পেয়েছেন। তিনি একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। তার মতো এমন লোক আর আমাদের এলাকায় হবে না।

ওই গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধা হাসিনা বেগম জানান, মহিউদ্দিনকে আমরা গ্রামে সূর্য মিয়া নামে ডাকতাম। তার মত ভদ্র ছেলে আমাদের গ্রামে নাই।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: