হালুয়াঘাট সিমান্তে বন্য হাতির তান্ডব

হালুয়াঘাট প্রতিনিধি | ১ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৪৮

সংগৃহীত

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্য হাতির তাণ্ডব থামছেই না। একের পর এক তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে বন্য হাতির দল।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার ভূবনকুড়া ইউনিয়নের কড়ইতলী এলাকার গৃহবধূ সাহেরা খাতুনের বসতভিটায় তাণ্ডব চালায় বন্য হাতির দল। এসময় বাড়ির উঠানের কাঠাল গাছ সহ দুইটি ঘর পা দিয়ে মাড়িয়ে তছনছ করেফেলে। এতে তাঁর প্রায় দুই লক্ষ টাকার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ৩৫-৪০ টি বন্য হাতির দল গত ১৫-২০ দিন ধরে উপজেলার কড়ইতলী এলাকার সীমান্তবতর্তী পাহাড়ের ঢালে অবস্থান করছে। সন্ধা হলেই খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে হাতির দলটি। হানা দেয় ফসলী জমি। গত কয়েকদিনে কড়ইতলী, লক্ষীকুড়াসহ কয়েকটি এলাকায় মানুষ রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও রক্ষা করতে পারছে না ফসলী জমি। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ একর সবজি ও আমান ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতির পাল। এ নিয়ে বিপাকে আছেন কৃষকরা। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কড়ইতলী এলাকার মহর উদ্দিনেন স্ত্রী ছাহেরা খাতুনের বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে তার থাকার ঘর ও রান্না ঘর ভেংগে তছনস করে দেয়। এসময় আরো বাড়ির আঙিনায় থাকা ফলের গাছ সহ বিভিন্ন গাছ নষ্ট করেছে। এতে তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন।
গৃহবধূ ছাহেড়া বলেন, হাতির চিৎকার শুনেই আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়েছি। এ সময় আমার থাকার ঘরটি হাতির দল ভেঙে ফেলেছে। পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়েছি।’

কৃষক আবু শাহ আলম বলেন, হাতির দল আগুন ও মানুষ দেখেও ভয় পায় না। হইহল্লা করেও কাজ হয় না। আমরা এখন নিরুপায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত কয়েতদিনে হাতির আক্রমণে ২ জন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ের হামলায় আহতও হয়েছেন। হাতির তাণ্ডব যেন থামছেইনা। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বন বিভাগ আর প্রশাসন হাতি তাড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় বারবার একই ঘটনা ঘটছে।

এ ব্যাপারে বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা গোপালপুর বিট কর্মকর্তা মো. মাজাহারুল ইসলাম জানান, বন্য হাতির দল পাহাড়ী জঙ্গল থেকে প্রতি রাতে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। এলাকাবাসীদের নিয়ে তাঁরা হাতি জঙ্গলে ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। গতকাল রাতে ছাহেরা খাতুনের বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। এতে তার প্রায় ২ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের থানায় জিডি করে বন বিভাগের ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাবেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: