বান্দরবানে শিশু ধর্ষণের অপরাধে শফিউল (৪৪) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল। এছাড়াও তাকে এক লক্ষ এক টাকা অর্থদন্ড জরিমানা করা হয়।
রবিবার সকালে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের জেলা ও দায়রা জজ বিচারক মো. সাইফুল রহমান সিদ্দিক এই রায় ঘোষনা দেন।
দন্ডপ্রাপ্ত হলেন-মো. শফিউল আলম। সে কক্সবাজার জেলার ভারুয়াখালি ইউনিয়নের ছোট চৌধুরী পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে। বর্তমানে সে বান্দরবান পৌর শহর বালাঘাটা ২ নং ওয়ার্ডের বসবাস করে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি শফিউল বালাঘাটা মসজিদ এলাকায় নুরুল ইসলাম নামে বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিলো। প্রতিদিনের মতন ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কাজের বের হন তার বাবা । রাস্তায় মধ্যখানে শিশুটির শারিরীক অবস্থা খারাপ হবে এমন চিন্তা ভেবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাচ্চাটিকে শফিউল কাছে তুলে দেন। পরে সকাল ১০ টা দিকে শিশুটির মাকে ফোন করে বলেন শিশুটির সাথে খারাপ ঘটনা ঘটেছে। এমন সংবাদ পেয়ে শিশুটির মা বাসায় দিকে ছুটে যান। শিশুটিকে কান্নারত অবস্থায় দেখে তার প্যান্ট খুলে দেখেন যৌনাঙ্গ লালচে ও বীর্যসহ অবস্থায় রয়েছে।
পরে শিশুটিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাদী হয়ে শফিউলের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুটির পরিবার।
এদিকে এজহার প্রাপ্ত হয়ে মামলায় তদন্তের দ্বায়িত্ব পান বান্দরবান সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মিঠুন সিংহ। ঘটনার সাক্ষীদের জিজ্ঞাসবাদ ও জবানবন্দি অনুসারে ১৮৯৮ এর ১৬১ ধারার বিধান মতে লিপিবদ্ধ করা হয়। ঘটনার তদন্ত ও সাক্ষ্যে সত্যতা পেয়ে আসামীর বিরুদ্ধের ২০২১ সালে ১৬ জুলাই শুক্রবার অভিযোগ পত্র ৫০ নং মুলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০৩ সংশোধিত ৯(১) ধারায় থানায় রিপোর্ট দাখিল করেন।
আজ সকালে ১১ জনের সাক্ষ্যের প্রমাণিত হওয়াই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০৩ সংশোধিত ৯(১) ধারায় দোষী সাব্যস্থক্রমে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং এক লক্ষ ১ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে যাবজ্জীবনসহ আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত।
শিশুটির অভিভাবক জানান, এ বিষয়ে আদালতে বিচার দিয়েছিলাম। বিচার করে রায় দিয়েছে আদালত । রায়ে তাকে যাবজ্জীবন দিয়েছে। আমি রায়ে খুশি।
রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বাসিংথুয়াই মার্মা বলেন, পুলিশ প্রমাণিদিসহ তদন্তপত্র দাখিল করে আদালতে। ১১ জন সাক্ষ্যের সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত সবকিছু পর্যালোচনা করে রায়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞ আদালত শফিউলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: