গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা: পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মৃত্যু

রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:১০

সংগৃহীত

পটুয়াখালীর দশমিনায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

নিহত সুমি আক্তার দশমিনা থানায় কর্মরত সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) শহীদুল আলমের স্ত্রী।

জানা যায়, এর আগে গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত অনুমান ২ টার দিকে দশমিনা থানার দক্ষিণ পূর্ব পাশে ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাড়া বাসায় নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগান সুমি। পরে ডাক চিৎকার শুনে ওই ভবনের মালিক ও অন্যান্য ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া পুলিশ কর্মকর্তারা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার সুমির আশংকাজনক শারীরিক অবস্থা দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অবস্থার আরও অবনতি হলে দ্রুত তাকে সেখান থেকে নিয়ে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে রাখা হয়। ওই আইসিইউতে বুধবার রাত ১০ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, সুমির শরীরের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো।

ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাড়া বাসার মালিক দশমিনা সদরের বাসিন্দা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, নিঃসন্তান শহীদুল সুমি দম্পতি আমার বাসায় প্রায় তিন বছর ধরে ভাড়া থাকতো। তাদের মধ্যে কোনো দাম্পত্য কলহ ছিলোনা। খুবই শান্তিপ্রিয় ছিলেন তারা। ওই দম্পতির বিয়ের প্রায় এক যুগ অতিবাহিত হলেও তাদের কোনো সন্তান না হওয়ায় সুমি প্রায়শই মানসিকভাবে অস্থির ও বিপর্যস্ত থাকতো। এ নিয়ে স্বামী শহীদুল আলম তাকে অনেক উন্নত চিকিৎসাও করিয়েছিলেন।

জানা যায়, গত ১২ বৎসর পূর্বে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের শহীদুল আলমের সাথে একই ইউনিয়নের দুপতি পশরিয়া গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের মেয়ে সুমি আক্তারের বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকেই ওই দম্পতি নিঃসন্তান রয়েছে।

সুমির পিতার পরিবার সুত্রে জানা যায়, শহিদুল সুমির দাম্পত্য জীবন অনেক সুখের ছিলো। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সুমির সন্তান না হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।

দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, এএসআই শহীদুল আলমের সংসারে অনেক প্রশান্তি ছিলো। শুধু সন্তান না থাকার কারণে তার স্ত্রী সুমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তো।

ডিএমপি'র শাহবাগ থানা সুত্রে জানা যায়, নিহত সুমির পিতা মো. শহিদুল ইসলাম ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের এএসআই শহীদুল আলমের প্রতি কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং তাদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে সুমির লাশ ময়নাতদন্ত না করে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: