মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

শেরপুর প্রতিনিধি | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৫৩

সংগৃহীত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের সূর্যনগর বড়ডুবি আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, মাদ্রাসার জমি সাব-কবলা ও বন্ধকি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে অদ্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. সুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) অধ্যক্ষ মো.সুরুজ্জামান এর নানা অপকর্মে ক্ষুব্ধ হয়ে বড়ডুবি এলাকাবাসী নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ সময় স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের সূর্যনগর বড়ডুবি আলিম মাদ্রাসা‌টি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখিত মাদ্রাসায় বর্তমানে ২০ জন শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী রয়েছেন। এবতেদায়ী থেকে আলিম পর্যন্ত খাতা কলমে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী থাকলেও সরেজমিনে গিয়ে ১২০ জনের মত ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়।

জানা যায়, গত ২০০৪ সালে মাও.মো.সুরুজ্জামান এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। এরপর থেকেই নিজের মত লোকজন নিয়ে পকেট কমিটি থেকে শুরু করে,বিশাল নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ,মাদ্রাসার জমি মোটা অংকের টাকায় সাব-কবলা বিক্রয় করে এবং বন্ধকি দেন।

অংশগ্রহনমূলক অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত মাদ্রাসা অধ্যক্ষের ছেলে মো.হাদিউল ইসলামকে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে ও তার ছেলে হাদিউলের স্ত্রী তাহমিনা আক্তারকে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেন।

এ সময় জাল সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এ ছাড়াও আরও তিন জন শিক্ষককে জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

জাল সার্টিফিকেট এর বিষয়ে হাদিউল ও তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রন্থাগারিক বিষয়ে সার্টিফিকেট পেয়েছে ও তার স্ত্রী কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পূর্ন করেছে এমন কিছুই বলতে পারে নাই এবং এক পর্যায়ে বিষয়টি এডিয়ে যায় তারা।

আরও জানাযায়, মাদ্রাসায় বর্তমানে চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি রয়েছে। মাদ্রাসার অবকাঠামো ও মাঠ সহ ৮১ শতাংশ,পুকুর ৩০ ও আবাদী ৩ একর জমি রয়েছে বলে জানা যায়,ইতোমধ্যে আবাদী সব জমি বিক্রয় সহ বন্ধকি দেওয়া আছে।

কোন সরকারী প্রতিষ্ঠানের জমি বন্ধকি বা সাব-কবলা বিক্রয় করা যায় কি না এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ অভিযুক্ত সুরুজজ্জামান কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং অবাঞ্ছিত বিদ্রুপমূলক কথা বলেন।

এ ঘটনায় বড়ডুবি গ্রামের মো.সুরুজ্জামান (৪৫) বলেন,যারা এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন,জমিদান করেছেন তাদের বা তাদের পরিবারের কাউকে না জানিয়ে অধ্যক্ষ তার ইচ্ছে মাফিক এই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। এই অর্থলোভি অধ্যক্ষ ২ একর এর বেশি জমি সাব-কবলা বিক্রয় করেছেন যাহার সকল দলিলপত্র আমাদের কাছে আছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেলেনা পারভীন বলেন,আমি ইতোমধ্যে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে খোঁজ নিতে বলেছি ও অধ্যক্ষ সুরুজ্জামান কে অফিসে হাজির হয়ে জবাব দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ প্রেরণ করেছি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: