দুর্গাপুরে এসএসসি পরীক্ষায় বেবীর অংশগ্রহনে হরিজন সম্প্রদায়ে উচ্ছাস

রাজেশ গৌড়,দু্র্গাপুর | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:১৭

সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে বেবী বাসফোর। প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষাও তার ভাল হয়েছে। বেবীর এই পরীক্ষা দেয়া নিয়ে নেত্রকোণার দুর্গাপুরের মোক্তারপাড়া এলাকায় থাকা হরিজন পল্লীর মানুষেরা আনন্দে ভাসছেন। উচ্ছাসিত এই পল্লীর বাসিন্দারা বলছেন, শিক্ষা, অর্থনৈতিক, সচেতনতায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাই অন্যতম। আর বেবীই তাদের মাঝে নারী শিক্ষায় দিশারী। সে এই পল্লী থেকে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বেবী তাদের গর্ব।

বেরী বাসফোর পল্লীর নির্মল ও মালা বাসফোর দম্পতির তৃতীয় সন্তান। তার মা দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী। বেবী দুর্গাপুর পৌরশহরের জহুরা জালাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

বেবী বাসফোরের মা মালা বাসফোর বলেন, অনেক দিনের স্বপ্ন পুরণের দিকে আগাচ্ছি। ছোট থেকেই মেয়ে পড়ালেখার প্রতি উৎসাহ ছিলো। আজ মেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে এতে আমরা সবাই খুব খুশি। মেয়ের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্যে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।


বেবী বাসফোর বলেন, পড়ালেখার বিষয়ে আমি সব সময় আমার পরিবার থেকে সার্পোট পেয়েছি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আমাকে সব সময় সব কিছু ভালোভাবে বুঝিয়েছেন। এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারি আমি খুবই আনন্দিত। আমি চাই আমার সম্পদ্রায়ের ছেলে মেয়েরা যেনো পড়াশুনা করে উচ্চশিক্ষিত হয়। আমার স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হওয়ার।

হরিজন পল্লীর বাসিন্দা চাঁন বাসফোর বলেন, বেবী আমাদের অহংকার। তাকে দেখে আমাদের পল্লীর অন্য মেয়েরাও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। তিনি বেবীর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেছেন।
জহুরা জালাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগম বলেন, বেবী খুবই ভাল মেয়ে। শান্ত ধরণের। লেখাপড়ায় খুবই আগ্রহী। নিয়মিত স্কুলে আসতো। পিছিয়ে পড়া জনজাতি থেকে উঠে আসতে মেয়েটিকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, হরিজন সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে। এ বছর দুর্গাপুর উপজেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথম বেবী বাসফোর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এতে আমরা খুবই আনন্দিত। তার এই উৎসাহ দেখে হরিজন সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ জাগবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: