পটুয়াখালীতে পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ ও তার বাহিনী দিয়ে মোঃ মাকসুদুর রহমান তালুকদারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনরা। আজ শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় পটুয়াখালী পিডিএস মাঠের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মানববন্ধনে নিহতের বড় মেয়ে মাকসুদা আক্তার মিশু বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি ঢাকা থেকে আসি। ঢাকা থেকে এসে বাবর লাশটাকে ভাল ভাবে দেখতেও পারি নাই। তবে তার আগেই নাকি লাশ দাফন করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার যখন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন সুতাখালী খাল দেখতে যান তখন সুস্থ শরীরে তাদের সাথে কথা বলেন আমার বাবা। তার কিছুক্ষন পর নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যানের সামনেই মেয়র আমার বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমার চাচাতো ভাইকে পুলিশ হ্যানকাপ পড়ায়। পরে সবাই বেরিয়ে গেলেও সন্ধ্যার পর আমার বাবার লাশ পাওয়া যায় শ্মশানের ভেতর। এছাড়া আমার বাবা যদি স্টকের কারনে মৃত্যু হয় তবে বাবার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন এলো কোথা থেকে আসলে আমার বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মেয়রের লোকজন বাসায় গিয়ে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছে। বাসা থেকে বের হতেই ভয় লাগে এখন। আমার বাবা হত্যার বিচার চাই সেই সাথে মেয়র ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আইনের আওতায় আনা হোক।
মাকসুদুর রহমান তালুকদারের বোন ঝুমা বেগম বলেন, যে জনগণের প্রতিনিধি সে জনগনকে রক্ষা করার উল্টো তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেললো। আমার ভাই হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চাই।
নিহতের ছোট মেয়ে নিশাত আক্তার জানান, বাবা হত্যার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ থাকবে আমরা যেন আমার বাবা হত্যার বিচার পাই।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী পটুয়াখালী পৌরসভার সুতাখালী খাল দেখতে যান এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তখন খাল রক্ষার দাবি নিয়ে এগিয়ে আসেন প্রতিবাদী এক বৃদ্ধ। এতে চেয়ারম্যানের সামনেই ওই বৃদ্ধকে হুমকি দেন পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ। মেয়রের বিপক্ষে অবস্থায় নেওয়ায় ওই বৃদ্ধের এক আত্মীয়কে পুলিশ গ্রেপ্তারও করে। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নাসির নামের একজনকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের তথ্য মতে, শ্মশানে দাহ করার স্লাবের নিচে বৃদ্ধের মরদেহ পড়ে ছিলো। দাহ করার জন্য রাখা কাঠ শরীরের ওপর ছিটানো ছিলো। পরে কয়েকজন তাঁকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার পর স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ দাফন করে। পরিবারের অনেক সদস্য তখন অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন,শুরুতে কেউ অভিযোগ দেয়নি। দাফন করার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে এসেছিল।
পৌর মেয়র মো. মহিউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: