পদ্মার আগ্রাসনে বিলীন এর পথে নারায়নপুর ইউনিয়নের দু’টি গ্রাম

বদিউজ্জামান রাজাবাবু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি | ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫৬

সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নে অব্যাহত পদ্মার ভাঙ্গনে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে নারায়নপুর ঘোন ও বত্রিশরশিয়া নামে দু'টি গ্রাম। শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে নদী তীরবর্তী ২টি গ্রামের মানুষ এখন নদীভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন।

খবর সূত্রের, সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নারায়নপুর ঘোন ও বত্রিশরশিয়া এ ২টি গ্রাম একসময়ে বেশ সমৃদ্ধ ছিল। পরিবারগুলো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলো।

অব্যাহত ভাঙনে এ গ্রামের শত শত বিঘা ফসলি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হতে চলেছে। আর এখন যেটুকু সম্বল আছে সে টুকুর উপর রাক্ষসী পদ্মার চোখ পড়েছে। রক্ত চক্ষুসেই সাথে ফিকে হয়েছে পরিবারগুলোর সব স্বপ্ন।

ভিটে মাটি হারানো পরিবারগুলো পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে চলে গেছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে যেন দিন দিন ছোট হচ্ছে এ ইউনিয়নটি।

ভাঙন কবলিত এলাকার ইউসুফ রাজা নামে এক যুবক জানান, এবার ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে, এ জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এই গ্রাম দু'টি।

চরের নারায়নপুর ইউনিয়নের ৪নং ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল আলিম ও সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য জাহানারা খাতুন জানান, নারায়নপুর ঘোন ও বত্রিশরশিয়া গ্রাম ভাঙ্গনের কবলে পড়া শুরু করেছে। এলাকার মানুষ বাধ্য হয়েই পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যখানে চলে যাচ্ছে, কিন্তু একসময় এ চরে প্রায় ৫’শ পরিবার স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতো।

বর্তমানে মাত্র ১’শ ৬০ টি পরিবার রয়েছে। এখনও যারা আছে তাদের দিন কাটছে ভাঙ্গন আতঙ্কে। তিনি আরো জানান, বেশ কয়েক বছর থেকে এ ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণেই আঘাত হানছে।

পাকা নারায়নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোকাররম হোসেন জানান, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তার কবল থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। নদী থেকে মাত্র পৌনে ৪’শ ফিট দূরে রয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান জানান, নদী ভাঙনের বিষয়টি জানতে পেরে গত ২৭ আগস্ট জেলাধীন পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত চরাঞ্চল পরিদর্শন করেন মান্যবর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এ কে এম গালিভ খাঁন। তিনি ভাঙ্গন কবলিত মানুষের সাথে কথা বলেন, তাদের দুঃর্দশার কথা শুনে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন তারা যেন নিরাপদে থাকতে পারেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করার ওয়াদা দিয়ে তাদের আস্বস্ত করে এসেছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: