পাবনার শহীদ এম. মনসুর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সামাদ খানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
একই সঙ্গে তার অপপসারণ ও নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন করেছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এই কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পাশেই শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ব্যানারে পালিত হয় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া কর্মচারীরা বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদে রযেছেন। তিনি ৬ মাসের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। অথচ বছরের পর বছর ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে স্বেচ্ছায় অথবা গভর্নিং বডির মাধ্যমে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। এই চিঠিকেও তিনি তোয়াক্কা না করে পদ ধরে রেখেছেন।’
তারা বলেন, 'ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষরযুক্ত কোনও পত্র বা আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গৃহিত হয় না, ফলে কলেজের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং ৪১ জন শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন শিক্ষকরা। এছাড়াও তিনি কলেজে নিয়মিত আসেন না। গুটি কয়েক শিক্ষক তার অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। তাদের দাপটে সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আতঙ্কে থাকেন।’
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, 'কলেজে আগে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হতো। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে তেমন ক্লাস-পরীক্ষা হয় না। কলেজের সামগ্রিক ফলাফল ভয়াবহ। ক্যাম্পাসের ভেতর বহিরাগতরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন। কলেজের মাঠ যেন গরু-ছাগলের অভয়াশ্রম। নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই, আবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষও আসেন না। ফলে এসব দেখার কেউ নেই।’
জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এম. মনসুর আলী। ফলে কলেজের সুনামের সঙ্গে তার নামটিও জড়িত। ফলে মহান এই জাতীয় নেতার সম্মান রক্ষার্থে কলেজের এমন পরিস্থিতি মোটেও কাম্য নয়। অতিদ্রুত কলেজটি জাতীয়করণ এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণের মাধ্যমে শিক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির জোর দাবি জানান তারা।
এসব কর্মসূচিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এই এইচ এম গোলাম মোস্তফা কামাল, ভূগোল ও পরিবেশের বিভাগীয় প্রধান আল-আমিন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ঈসমাইল হোসেন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাকসুদা আক্তার, প্রধান অফিস সহকারী রেজাউল ইসলাম, মিরাজুল ইসলাম, এমএলএস ইকবাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সামাদ খান বলেন, ‘গুটি কয়েক কর্মচারী কারো উস্কানিতে এসব কর্মসূচি পালন করছেন। আর শিক্ষকদের দাবিগুলো ঠিক নয়, তাঁর বিরুদ্ধে দেয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠির বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছি। সেটি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: