মুরাদনগরে মাদক সিন্ডিকেট চালাতেন ওসি আবুল হাসেম

ইসমাইল হোসাইন রায়হান | ২২ আগষ্ট ২০২২, ২৩:৪৬

সংগৃহীত

কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল হাসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। মাদক সিন্ডিকেট, চোরাকারবারি, সহকর্মীদের সাথে অশোভন আচরণ দায়িত্ব অবহেলা সহ পাহাড়সম অভিযোগ মাথায় নিয়ে গত ২০ শে আগষ্ট শনিবার বদলি হয়েছে।

দায়িত্ব পালনকালে তিনি থানার সেকেন্ড অফিসার রেজা সহ অন্যান্য সহকর্মীদের অপেশাদার আচরণ করতেন।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আসামি আটক করে টাকার বিনিময়ে ফের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওসি আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে। আবার টাকা দিতে না পারা লোকজনকে নানাভাবে নাজেহাল করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গুরুত্বপূর্ণ পদের এই পুলিশ কর্মকর্তা ‘ভিন্ন’ কাজে ব্যস্ত থাকায় মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অপরাধমূলক ঘটনা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, কুমিল্লা মুরাদনগর থানায় যোগদানের পরপরই ওসি আবুল হাসেম মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী, ডাকাতসহ অপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মাসোয়ারার বিনিময়ে তাদের অপরাধে অনেকটাই উৎসাহ দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা। তার আচরণে থানায় কর্মরত কনস্টেবল থেকে শুরু করে এসআই ও এএসআইরা ক্ষুব্ধ হলেও প্রতিবাদ করতে পারেন না।

ঊর্ধ্বতনদের ‘ম্যানেজ’ করেই তিনি চলেন। থানার যেসব এসআই বেশি অর্থ আদায় করে দিতে পারেন, তাদের কম ডিউটি দিয়ে তিনি আরামে থাকার ব্যবস্থা করেন। আর যারা মাসোয়ারাসহ অর্থ আদায়ে ব্যর্থ হন, তাদের রাত-দিন ডিউটি দিয়ে হয়রানি করেন আবুল হাসেম।

যেসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করেন তাদের একটি তালিকা রয়েছে। এই তালিকায় আছেন- এসআই হামিদ, হেলাল, কিবরিয়াসহ অনেকে। উক্ত থানার সাবেক ওসি সাদেকুর রহমান জানান তিনি তার দায়িত্ব গ্রহণের পর ১ বছর সময় না পেরোতেই তাকে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার) ও ওসি হাসেম মিলে তাকে কুমিল্লা জেলা থেকে নোয়াখালীতে বদলি করেন। বর্তমানে তিনি নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগন্জ থানায় কর্মরত।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের একটি আদেশের বরাত দিয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ওসি আবুল হাসিমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে সংযুক্ত করা হলো। নির্দেশিত কর্মস্থলে শনিবার বেলা দুইটার মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাশিমকে প্রত্যাহার করার কথা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি যানজটে পড়েছি, সে জন্য ওসিকে প্রত্যাহার করিনি। প্রায়ই লোকজন সেখানে যানজটে পড়ে দুর্ভোগ পোহান। স্থানীয় ওসি দায় এড়াতে পারেন না। তাই দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাইওয়ে পুলিশের একার পক্ষে সড়কের যানজট দূর করা সম্ভব নয়, অবশ্যই স্থানীয় থানা–পুলিশকে জনদুর্ভোগ দূর করতে হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: