ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় পাবনার চাটমোহরের সাংবাদিক কে. এম বেলাল হোসেন স্বপন কে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ জিয়াউর রহমান যুক্তিতর্ক ও শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
সাংবাদিক বেলাল হোসেন স্বপন চাটমোহর উপজেলা থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক সময় অসময়’ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। এছাড়া তিনি চাটমোহর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি।
আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন সরকার। আর রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম।
মামলা সুত্র জানায়, চাটমোহর পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে একজন মেয়ের একটি উড়ো চিঠি নিয়ে গত ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস দেন সাংবাদিক বেলাল হোসেন স্বপন।
এ ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে চাটমোহর পৌরসভার ৪ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজ আলী বাদি হয়ে একইদিনগত রাতে চাটমোহর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক বেলালকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরদিন ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে সেই মামলার আসামী হিসেবে চাটমোহর পৌর সদরের শাহী মসজিদ মোড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বেলাল হোসন স্বপন কে গ্রেপ্তার করে পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ।
তবে, তার আগে ২৫ ডিসেম্বর রাতেই পোস্টটি নিজের ফেসবুক ওয়াল থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন বেলাল হোসেন স্বপন। আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘চিঠিতে উল্লেখিত নামের মেয়ের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।’
এরপর ২৭ ডিসেম্বর বেলালকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। জামিনের আবেদন করা হলে আদালত না মঞ্জুর করে সাংবাদিক বেলাল হোসেন-কে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। প্রায় এক মাস পর কারাভোগের পর ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি তার জামিন মঞ্জুর করেন পাবনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
এদিকে, তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটি পাবনা সহকারি জজ আদালত থেকে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনাল সাংবাদিক বেলাল হোসেনকে অন্ত:বর্তীকালীন জামিনে রেখে সাক্ষ্য গ্রহণ ও অন্যান্য আইনী প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার তাকে বেকসুর খালাস দেন।
আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সাংবাদিক বেলাল হোসেন স্বপন বলেন, 'অন্ধকার কেটে গিয়ে এক সময় যেমন সূর্যের কিরণ পৃথিবীকে আলোকিত করে। তেমনি মিথ্যা ক্ষণস্থায়ী, ঘোষিত রায়ে মিথ্যার মেঘ কেটে গিয়ে সত্যের জয় হয়েছে।'
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: