ডেপুটি স্পিকারের সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী

সময় ট্রিবিউন | ১০ আগষ্ট ২০২২, ০৬:৪১

সংগৃহীত

নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) সংসদীয় আসনে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া এমপির মৃত্যুতে শূন্য হয় এই সংসদীয় আসনটি। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে এই আসনটিতে উপ-নিবার্চন হবে। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ জন। ইতিমধ্যে পাঁচ জন প্রার্থী তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ জন হলেন সদ্য প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ ও যুবলীগ নেতা সুশীল চন্দ্র সরকার। সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। দুই উপজেলায় কিছুটা রাজনৈতিক মতানৈক্য থাকলেও যিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন তার পক্ষেই সকলেই কাজ করবেন বলে মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ জন জানিয়েছেন। এই শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে মুখ্য আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে পাঁচ জনের মধ্যে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?

প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের ইমেজ ব্যবহারের পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন তার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে তার বাবার সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করেছেন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার সম্মানে তাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন। তিনি তার বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চান। তিনি বলেন, ফুলছড়িতে তার শ্বশুরবাড়ি, সাঘাটায় বাবার বাড়ি। তাই নির্বাচনে তিনি বাড়তি সুবিধা পাবেন।

ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনও আশাবাদী দলীয় মনোনয়ন পাবেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন। মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন। আর নির্বাচিত হলে প্রথমেই উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বাড়াতে বালাসী-বাহাদুরাবাদ টার্নেল নির্মাণে উদ্যোগী হবেন।ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ি রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করবেন। চরাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিয়ে মানুষের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য শতভাগ আশাবাদী। কারণ ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম। একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রশ্নে সবসময় আপোষহীন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রাজনীতি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। সাঘাটা-ফুলছড়ির স্থানীয় রাজনীতিতেও নেতা-কর্মীদেরকে সময় দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিলে সাঘাটা-ফুলছড়ির সার্বিক উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে কাজ করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার সংগ্রামে একজন সারথী হয়ে ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করবো। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নত ও সমৃদ্ধ ডিজিটাল সাঘাটা-ফুলছড়িকে স্মার্ট সাঘাটা-ফুলছড়িতে রূপান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আল মামুন আরোও বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে আমি নির্বাচিত হলে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনকে স্থায়ীভাবে প্রতিরোধের ব্যবস্থাকরণ, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নদী কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র তৈরী, বালাসী-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত টানেল নির্মাণ, শিল্প-কলকারখানা, হাইটেক পার্ক, আইসিটি সেন্টার ও তৈরী পোশাক কারখানা স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবো। রাজধানীর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ, দ্রুত গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থাকরণ, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের চেষ্টা করবো। চর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি চরাঞ্চলে মানসম্মত শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষকদের ভাগ্যেন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরী করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। সদ্য প্রয়াত মাননীয় ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়া এমপির অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করে সাঘাটা-ফুলছড়িকে আরোও উন্নত ও সমৃদ্ধ উপজেলাতে রূপান্তর করা হবে। দুই উপজেলার সর্বস্তরে ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে জবাবদিহিতার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলা পরিচালিত হবে। সমগ্র দেশে এই দুটি উপজেলাকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দলীয় মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সাঘাটা-ফুলছড়ির সকল শ্রেণী পেশার মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মরা আমাকে নিয়ে অনেক বেশী আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে আমি এলাকার মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি মনোনয়ন পেলে সকলের সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়ে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় আাশা করি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: