মতি বাহিনীর তান্ডব: বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর

মোশতাক আহমেদ শাওন | ৫ আগষ্ট ২০২২, ১০:৪১

সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির নেতৃত্বে তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী সিদ্ধিরগঞ্জ তাঁতী লীগের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় কাউন্সিলর মতির নির্দেশে সন্ত্রাসীরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মো. লিটন আহমেদকে ব্যাপক মারধর করে। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শরীরে ও মুখে আঘাত করলে লিটন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। 

সীমা আক্তার নামে এক নারী ও তার স্বামী আমির হোসেন লিটনকে বাচাঁতে এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান পানি আক্তার। 

এ সময় তারা তাঁতী লীগের অফিসে দেয়ালে লাগানো বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ছবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাকর্মীদের ছবি ভাংচুর করা সহ অফিসে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে হার্ডডিস্ক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী মতি তার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্যই কাউন্সিলর মতির নেতৃতে সন্ত্রাসী বাহিনীরা সিদ্ধিরগঞ্জে তাঁতী লীগের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও মারধর করেছে হানাপাতালে চিকিৎসাধিন আহত লিটন জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সুমিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সন্ত্রাসী ও মাদকের শেল্টারদাতা মতির নেতৃত্বে হামলা চালায় একাধিক মামলার আসামি ও কিশোর গ্যাং লিডার আক্তার ওরফে পানি আক্তার, মতির ছোট ভাই মাহবুব, মামুন ওরফে ভাগিনা মামুন, টুন্ডা মিজান, নুর হোসেন, মাসুদ, হৃদয়, রবিউল, মান্নানসহ আরও অজ্ঞাত ৩০/৪০ লোক এই হামলায় অংশ নেয়।

এসময় অফিসে বসা সিদ্ধিরগঞ্জ তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মো. লিটন আহমেদকে কিশোর গ্যাং লিডার আক্তার ওরফে পানি আক্তার দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শরীরে ও মুখে আঘাত করলে লিটন মাটিতে পরে যায়। এসময় লিটনকে বাচাঁতে গেলে সীমা আক্তার নামে এক নারী ও তার স্বামী আমির হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে পানি আক্তার। পরবর্তীতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী মতি তার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে হামলার শিকার তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মো: লিটন আহমেদ জানান, আদমজী ইপিজেডের ভিতরে একটি নির্মাণাধীন গার্মেন্টস কারখানায় ইট,বালু সরবরাহসহ রং ও টাইলস বসানোর কাজ পেয়েছি। কাজ প্রায় শেষের পথে। এসময় মতির লোকজন আমার কাজে বাধা দেন এবং আমার লোকজনকে সেখান থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যেতে বলেন। কাজটি জোর করে তারা তাদের নিয়ন্ত্রনে নেয়ার চেষ্টা করছিলো।

 এক পর্যায়ে তাদের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে দুপুরে সন্ত্রাসী মতির নির্দেশে তার সহযোগী কিেেশার গ্যাং লিডার পানি আক্তার আমার উপর হামলা চালায় ও অফিসের আসপত্রসহ প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর করে। এসময় ঘটনাস্থলে কাউন্সিলর মতি উপস্থিত ছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, হামলার বিষয়টি থানায় অবহিত করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসা শেষে থানায় গিয়ে মামলা করবেন। কাউন্সিলর মতি সবাইকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছেন। 

এদিকে, হামলার ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মতি এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, কিশোর গ্যাংয়ের শেল্টারদাতা ও বিশাল মাদক ব্যবসায়ী চক্র গড়ে তুলেছেন। 

দলীয় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস নিয়ন্ত্রন করছে সন্ত্রাসী মতি ও তার বাহিনী। আদমজী ইপিজেডে পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন এই সন্তাসী মতির হাতে। নিয়ন্ত্রন নিয়েছেন একাধিক কারখানা। 

শুধু ইপিজেড নয় আরো বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রন করছেন এই মতি। তার বিরুদ্ধে কোটি কেটি টাকা আত্বসাতের মামলা করেছেন দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম বার বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় যোগায়োগ করেছেন। আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীণ রয়েছে। কোনো অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবেনা। 

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: