বিএডিসি'র উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ

মো. রাজন মিয়া, শেরপুর | ৪ আগষ্ট ২০২২, ১১:৩৬

সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) শেরপুর হিমাগারের উপ-পরিচালক মো. খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে এক কিশোর (১৩) কে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় গত ১ আগস্ট (সোমবার) ভুক্তভোগী কিশোরের পিতা নিজে বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। 

জানাযায়,(বিএডিসি)'র উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

২ আগষ্ট (মঙ্গলবার) শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ওই কিশোরের ডাক্তারি পরীক্ষা করে ও আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা সতর্কতার সাথে নিজ অফিস করলেও ৩ আগষ্ট (বুধবার) থেকে সে আত্মগোপন করেছে।

এ ঘটনায় মামলা এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০/২৫ দিন পূর্বে শেরপুর পৌর শহরের শেরীব্রিজ সংলগ্ন (বিএডিসি) বীজ সংরক্ষন হিমাগারের শ্রমিক সর্দার শরাফত আলীর মাধ্যমে উপ-পরিচালক খলিলুর রহমানের কোয়ার্টারে কাজের লোক হিসেবে কাজ শুরু করে সদর উপজেলার পূর্ব মনকান্দা এলাকার দরিদ্র পরিবারের ওই কিশোর।

উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান নানা প্রলোভনে ওই কিশোরকে পায়ুপথে বলাৎকার করে এবং বিষয়টি প্রকাশ না করতে নানা ভয়ভীতি দেখায়।

এ নিয়ে বলাৎকারের শিকার কিশোর তার মা-বাবাকে বিষয়টি না জানালেও মন খারাপ করে থাকছিল। 

এমতাবস্থায় গত ১ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ১০ ঘটিকার সময় ঔ কিশোর কাজে যাওয়ার পর উপ-পরিচালক খলিল কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় তার বসবাসের কক্ষের ভেতর নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে খাটের উপর শুইয়ে তার পরনের প্যান্ট খুলে জোরপূর্বক আবার বলাৎকার করে। পরে কিশোর কান্নাকাটি করতে করতে কোয়ার্টার থেকে বের হতে থাকলে অফিসের স্টাফসহ যাতায়াতকারী লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ওই ঘটনা ফাঁস করে দেয়।

পরে খবর পেয়ে তার বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পায় এবং সেদিনই কিশোর পুত্রকে নিয়ে থানায় গিয়ে উপ-পরিচালক খলিলকে একমাত্র আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

এঘটনায় শেরপুর সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে থানায় নিয়মিত মামলায় রেকর্ডভুক্ত করে।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে (বিএডিসি)'র উপ-পরিচালক খলিলের মুঠোফোনে কল দিয়ে সেটি বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

৩ আগষ্ট (বুধবার) বিকালে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের (আরএমও) ডা.খাইরুল কবীর (সুমন) জানান, মঙ্গলবার ওই কিশোরের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি পরীক্ষার বিষয়ে কোন মতামত না দিয়ে জানান, রিপোর্ট দিতে ৪/৫ দিন সময় লাগবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার সেকেন্ড অফিসার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন দেবনাথ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি ভিকটিমের পরিধেয় প্যান্ট-শার্টসহ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া মামলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরও জবানবন্দি গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সেই সাথে আদালতে তার জবানবন্দিও গ্রহণ করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। তার মতে, ডাক্তারি রিপোর্ট ও তদন্তেই জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: