কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বসতবাড়ীর দুই শতক জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে হামলায় গুরুতর আহত কুলসুমা বেগম (৬৫) চিকিৎসাধিন অবস্থায় রোববার (৩১ জুলাই) সকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত কুলসুমা বেগম চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাধিন শ্রীপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়া মজুমদার বাড়ীর মৃত আবদুল খালেকের স্ত্রী। এ ঘটনায় নাজমা, তাসলিমা ও আঙ্গিনা নামে কমপক্ষে আরও তিন নারী গুরুতর আহত হয়েছে। হামলায় নিহতের মেয়ে নাজমা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুলসুমা বেগমের সঙ্গে তার ভাশুর ধন মিয়া ও দেবর আরছ মিয়ার সাথে বসতবাড়ীর জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো।
গত শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল সাতটার দিকে ধন মিয়া, আরছ মিয়া, ধন মিয়ার ছেলে শাহিন ও সাইফুল পরিকল্পিতভাবে কুলসুমা ও তার মেয়ে নাজমা আক্তারকে মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় তাদের আত্ম-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে গুরুতর আহতাবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে ভর্তি দেন। পরে রোববার সকাল দশটার দিকে গুরুতর আহত কুলসুমা বেগম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত কুলসুমা বেগমের বড় জামাতা মো. ভুট্টু বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আমার শাশুড়িকে প্রায়ই তাঁর ভাশুর দেবররা মারধর করতেন। কিছুদিন আগেও আমার শাশুড়িকে উনার ভাশুর ধন মিয়া ও আরছ মিয়া একই বিরোধের জেরে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারেন। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে আমরা একাধিকবার শালিস ডাকলেও তাঁরা কাউকে পাত্তা না দেয়ায় বৈঠক হয়নি।’
কুলসুমা বেগমের ছেলে মো. সোহেল বলেন, ‘আমার জেঠা ধন মিয়া স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাড়ির জন্য জায়গা ক্রয় করেন। কিন্তু আরছ মিয়া ও ধন মিয়া আমাদের কাছে জায়গা পাবেন বলে বিরোধ সৃষ্টি করেন। মাত্র দুই শতক জায়গা নিজেদের দাবি করে তাঁরা আমার মাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো। তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পাত্তা না দেয়ায় কেউ বিচার করতে আসতে চায় না।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্য নেয়ার জন্য তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে তারা কল কেটে দেয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কুলসুমা নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে’।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: