এখন এক খণ্ড জমি ফেলে রাখার সময় না: শামীম ওসমান

মোশতাক আহমেদ শাওন | ২৮ জুলাই ২০২২, ০৬:০৯

সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা চাল উৎপাদন করি। হয়তো খাদ্যের সংকট হবে না। গম ভুট্টা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। । ধনী দেশ গুলো আগে থেকেই রিজার্ভ করছে। এখন যদি গম না পাই, গম ভুট্টার মূল্য যদি বেড়ে যায় এর প্রভাবে গরুর দুধ, ডিম, মাছ, মাংসের দাম বাড়বে। কারণ গম-ভুট্টা থেকে উৎপাদিত হয় ভুষি, গরুর খাবার ও মাছের খাবার। ফলে এর প্রভাব পড়বে গরুর দুধের দাম, মাংস উৎপাদনে। ডিম, কিংবা মাছেও।

তাই আমাদের সম্পদের সৎ ব্যবহার করা উচিৎ। আমাদের এখন এক খণ্ড জমি ফেলে রাখার সময় না। কোনো জিনিস অপচয় করার সময় না। বিনা কারণে এক মিনিটও লাইট জ্বালানোর দরকার নেই। সবকিছুই সাশ্রয় করতে হবে।

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া টাউন হলে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোসা. ইসমত আরার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুর ইসলামসহ নারায়ণগঞ্জের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন ও সামাজিক বন বিভাগের আয়োজনে ৭ দিন ব্যাপী এই মেলায় ৩০টি স্টলে অংশ নিয়েছে ২৭টি নার্সারী ও ২টি মধু খামারী।

এ সময় শামীম ওসমান আরো বলেন, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিল। এখনও অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছে। তারপরেও আমাদের এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার কারণ নাই। আমাদের এটাকে অতিক্রম করতে হবে। আর এটার জন্য নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসা দরকার।

নতুন প্রজন্মের উচিৎ নিজের বাবা, মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। এরপর যে সমাজে থাকে, সেই সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। যাতে মৃত্যুর আগে বলতে পারেন, আমি আমার দেশের জন্য একটা ভালো কাজ করেছি। সাড়ে চার কোটি তরুণ যদি একটি করে ভালো কাজ করে তাহলে এ দেশকে কেউ রুখতে পারবে না।

তিনি বলেন, জার্মানে চেম্বার অব কমার্সের লোকজনদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমরা বিশ্ব যুদ্ধের পরেও নিজেদের উঠিয়ে নিয়ে আসলে কেমন করে। তারা বললো আমরা যুদ্ধের পর যখন ক্ষতবিক্ষত তখন ঠিক করেছিলাম দুটো রুটির জায়গায় একটা রুটি খাবো। আরেকটা রুটি পরবর্তী জেনারেশনের জন্য সেভ করে রাখব।

সেই জার্মান আজ ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। আমি মনে করি আমাদেরও এটা চিন্তা করতে হবে। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি। এর মেইন সোলজার হবে ইয়াং জেনারেশন যারা সব আন্দোলন করেছে। তাদেরই করতে হবে। কারণ তারাই এখন যোদ্ধা।

তিনি বলেন, দুবাই মরুর দেশ হলেও সেখানে এখন সবুজ হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের সবুজ শ্যামল দেশটি দিন দিন মরুতে পরিনত হচ্ছে। লিংক রোড দিয়ে আসলাম। রাস্তার পাড়ে যে অবস্থা হচ্ছে, দুই পাশে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে, মরা গরুও পড়ে থাকে। মানুষ এ গুলো দেখে, প্রশ্ন করে। ময়লা আবর্জনার কারনে সড়কের পাশে যে ড্রেন হচ্ছে সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। আর এতে মানুষ কষ্ট পাবে। পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করে যারা ম্যাজিস্ট্রেট তাদের এগুলো দেখা দরকার। মীর জুমলা সড়ক বন্ধ। চৌকি বসিয়ে টাকা নেওয়া হয়। এসব কারণে লোকজন আমাদের গালি দেয়। প্রশাসনের যারা আছে তারা তো কাজ করে বদলী হয়। আমাদের কাজ বলা আর প্রশাসনের কাজ করা। রাজনীতি করতে এসে সত্য কথা যদি বলতে না পারি রাজনীতি করব কেন। কেউ যদি সত্য বলতে না পারেন চুপ থাকেন। সাংবাদিকরা লেখেন না কেন। এটা আপনার এলাকা আপনার দেশ।

শামীম ওসমান বলেন, বন বিভাগ থেকে গাছ বিনা পয়সায় বিতরণ করা হয়। আমার নামেও হয়তো কিছু এসেছে। আপনারা গাছ গুলো দিলে, ময়লা ফেলার স্থান গুলোতে গাছ গুলো রোপন করবে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা। এতে গাছও হবে, সৌন্দর্যও বাড়বে। দেখতে খারাপ লাগবে না।

তিনি বলেন, এখন অনেকেই দেখি বাসার ছাদে, বারান্দায় গাছ রোপন করেন। দেখতেও ভালো লাগে। তাছাড়া গাছ গুলো শুধু পরিবেশটাকে সুন্দর করে না, ফলনও দেয়। এটা আপনাকে অনেক কিছুই রিটার্ন দেবে। এক সময় এই শীতলক্ষ্যার পানি খেয়েছি এত পরিষ্কার ছিল। আজ এ পানিতে মাছ কেন সাপও হয় না। আমরাই এগুলো নষ্ট করেছি। আমাদের এটা পরিবর্তন করতে হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: