৯ বছরেও মেলেনি একজন রিসোর্স শিক্ষক 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি | ২৬ জুলাই ২০২২, ১০:৩৫

সংগৃহীত

৯ বছর পেরিয়ে গেলেও মেলেনি গাইবান্ধা সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে একজন রিসোর্স শিক্ষক। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ পদ শূণ্য থাকায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাঠদান, শিক্ষার্থীদের সমস্যায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন, পুনর্বাসনে সহায়তাসহ দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রæত একজন রিসোর্স শিক্ষক পদায়নের দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। 

গাইবান্ধা সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম কার্যালয় সূত্র জানায়, সমাজসেবা অধিদফতরের আওতাধীন গাইবান্ধায় সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে পশ্চিমপাশে হোস্টেল সংলগ্ন। এই দপ্তরের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা রিসোর্স শিক্ষক বদলী হন ২০১৩ সালের ২৮ জুন। তারপর থেকেই পদটি শুন্য রয়েছে। তবে হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার, কুক কাম অ্যাটেনডেন্ট ও নিরাপত্তা প্রহরী পদে তিনজনই কর্মরত রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার গত ২৪ মার্চ থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন রিসোর্স শিক্ষকের। 

সূত্রটি আরও জানায়, ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের এখানে ভর্তি করা হয়। এরপর অ্যাকাডেমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য তাদের ভর্তি করা হয় পাশেই মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজে। ১০টি আসনের মধ্যে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে চারজন। প্রত্যেকে এখানে আবাসিক থাকেন। তারা পান সরকারি বিভিন্ন ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে ২১ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছয়জন এবং এইচএসসিতে চারজন। বর্তমানে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে চারজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পড়ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

এখানে আবাসিক থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানায়, রিসোর্স শিক্ষক থাকলে আমাদের অনেক উপকার হতো। আমরা সঠিকভাবে ব্রেইল পদ্ধতিতে ভালোভাবে পাঠদান করতে পারতাম। আমাদের সমস্যার দ্রæত সমাধান ও পুনর্বাসনের কাজসহ অন্যান্য কাজও অনেক সহজ হতো। কিন্তুরিসোর্স শিক্ষক না থাকায় এখন সব কাজই বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। 

রিসোর্স শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার মো. রিয়াজুল হক বলেন, রিসোর্স শিক্ষক ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করাবেন। কোন শিক্ষার্থীর কি সমস্যা তা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনসহ পুনর্বাসনে সহায়তা করবেন। খাবারের মান সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করবেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনসহ দাপ্তরিক অন্যান্য দায়িত্ব পালন করে থাকেন রিসোর্স শিক্ষক। 

রিয়াজুল হক আর বলেন, ৯ বছর ধরে রিসোর্স শিক্ষক না থাকায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সব চাপ একা আমাকে সামলাতে হচ্ছে। যেমন- কোন এলাকায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খুঁজতে বের হলে দপ্তর কর্মকর্তা শুন্য হয়ে পড়ে। সেইসাথে ছুটিতে থাকলে বা দাপ্তরিক কাজে বাহিরে গেলে তখন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তাই তাদের একা রেখে ঠিকমতো বাহিরে গিয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারিনা। 

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ পদটি শুন্য থাকায় এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শুন্যপদে জনবল চেয়ে প্রতিমাসেই আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু কাউকে পদায়ন করা হচ্ছেনা। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: