সরকার লোডশেডিংয়ের জন্য পুরোপুরিভাবে দায়ী। এছাড়া দেশ আজ সত্যিকার অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
টুকু বলেন, সরকার অপরিকল্পিতভাবে জনগণের অর্থ ব্যয় করেছে। জনগণের অর্থ ব্যয় করার জন্য সরকার কিছু ব্যক্তির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এসব ব্যক্তি লাঠি-কলমের শক্তি দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রেখেছেন ও সরকার তাদের পেট মোটা করছে।
সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ বিষয়ে যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় টুকু বলেন, রিজার্ভে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বিদেশ থেকে তেল-গ্যাস আমদানি করা যাচ্ছে না, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) করা যাচ্ছে না। এসব কারণে বিদ্যুতের ব্যবহারের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছে, যাতে কম খরচ হয় ও কম আমদানি করতে হয়।
‘সরকার এতদিন ঢোল পিটিয়েছে যে, আমাদের রিজার্ভ বিশাল, আমাদের এই আছে-সেই আছে, ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গিয়েছি আমরা। এখন সেই রিজার্ভ গেল কোথায়? হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কেন? ৪৩ বিলিয়ন থেকে ৩৮ বিলিয়নে নামলো কেন? এটা তো সরকারি হিসাব, রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন আছে কি না তা নিয়েও আমাদের সন্দেহ রয়েছে।’
তিনি বলেন, এ সরকার আসার আগে আমাদের প্রতিষ্ঠিত যে পাওয়ারপ্লান্ট ছিল সেগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৬৪ শতাংশ সরকারের হাতে ছিল। বর্তমান সরকার তড়িঘড়ি করে আমাদের ভালো ভলো পরিকল্পনা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিয়ে দিয়েছে। সংসদে নতুন আইন পাস করিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে পাওয়ারপ্লান্ট দেওয়া হয়েছে।
টুকু বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যেভাবে নাচ-গান-ফুর্তি করা হলো, তেমনি শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলেও হাতিরঝিলে ফানুস ওড়াতে দেখেছি, নাচতে দেখেছি। অথচ আজ সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। যেটা করার দরকার ছিল সেটা সরকার করেনি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কর্তৃত্ব সরকারের হাতে রাখা দরকার ছিল।
সরকার উৎপাদন করলে আজ এ ক্যাপাসিটিতে পেমেন্ট করতে হতো না। সরকার প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে, কিন্তু এখন বিদ্যুৎ দিতে পারছেন না। বিদ্যুতের বদলে টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ টাকা কার? জনগণের টাকা। আসলে বিষয়টি এমন দাঁড়ালো যে, অন্ধকারেও থাকলাম আবার টাকাও দিলাম। দেশের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা অতীতে ঘটেনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও শায়রুল কবির খান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: