ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর ১৯,০০,০০০/- (ঊনিশ লক্ষ) টাকা ছিনতাই এর চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত আসামী গ্রেফতার হয়েছে এবং ০৩ টি মোটর সাইকেল জব্দ ও ৪,৫৪,৫০০/-টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অদ্য পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর ১৯,০০,০০০/- (ঊনিশ লক্ষ) টাকা ছিনতাই এর চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত আসামী গ্রেফতারসহ ০৩ টি মোটর সাইকেল জব্দ ও ৪,৫৪,৫০০/-টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং প্রদান করেন জনাব মোঃ শহীদুল ইসলাম (পিপিএম) পুলিশ সুপার নোয়াখালী। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা উর্ধতন কর্মকর্তা গণ ও সাংবাদিক বৃন্দ।
গত ২০/০৬/২০২২ খ্রিঃ বেলা অনুমান ১১.৪৫ ঘটিকায় আটিয়া বাড়ীর ব্রিজ সংলগ্ন শাহ আলমের ডাইলের মিলের সামনে রাস্তার উপর হতে ১৯,০০০০০/- টাকা ছিনতাই হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় উক্ত টাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাষ্টার এজেন্ট এসবি টেলিকমের মালিক মোঃ সাইফুল বাশার (৪৩), পিতা-মোঃ শহিদ উল্যাহ, সাং-হাজীপুর, দক্ষিণ বাজার, ব্যাংক রোড, চৌমুহনী পৌরসভা, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী তার বিক্রয় প্রতিনিধি মোঃ মোজাম্মেল প্রঃ জামশেদ (৩৮), পিতা-মোঃ শাহ আলম, মাতা-কহিনুর বেগম, সাং-একলাশপুর, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী এর মাধ্যমে ডাচ বাংলা ব্যাংক, চৌমুহনী শাখা হতে উত্তোলন করে বাংলা বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা গুলোতে নিয়ে যাচ্ছিল।
উক্ত ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার মামলা নং- ৩৮, তাং- ২১/০৬/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৪ পেনাল কোড রুজু হয়। বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ ছিনতাই এর ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক টাকা উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালায়। ঘটনাস্থল এবং ব্যাংকের আশেপাশে বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনাসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সন্দেহভাজন তিনজন ছিনতাইকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে তাদের বিস্তারিত নাম পরিচয় যাচাই পূর্বক অদ্য ১৪/০৭/২০২২ খ্রিঃ সকালে চৌমুহনী সংলগ্ন গনিপুর, পৌর করিমপুর ও দূর্গাপুর সাকিনে অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই এর সাথে সরাসরি জড়িত তিনজন এবং তাদের সহযোগী একজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। যুবায়েদ হোসেন বিপ্লব (২৮), পিতা-মোঃ আবুল কাশেম, সাং-পৌর করিমপুর, ২। মোঃ পারভেজ(৩০), পিতা-বেলাল হোসেন, সাং- হাজীপুর, ৩। মোঃ আমিরুল ইসলাম প্রঃ সুজন (২৮), পিতা-মৃত অজি উল্যাহ, সাং-দূর্গাপুর, সর্ব থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী) এবং সহযোগী আসামী ৪। মোঃ সাহাবুদ্দিন(৩৭), পিতা-মৃত আবুল হোসেন, সর্বসাং- গনিপুর, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী।
উল্লেখ্য যে, সুজন মোটর সাইকেলটি চালাচ্ছিল, মাঝখানে পারভেজ এবং বিপ্লব পিছনে বসা ছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী দুই ভাই ১। ইয়াছিন আরাফাত রহিম(৩২) ও ২। মহিন উদ্দিন সোহাগ (৩৮), উভয়পিতা-মৃত আবুল হোসেন, সাং- গনিপুর, থানা বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী। অভিযান টের পেয়ে রহিম ও সোহাগ পালিয়ে গেলেও তাদের বাড়ীর নিজ নিজ গৃহ থেকে সর্বমোট ৪,১৯,০০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়। অপরাপর আসামীদের নিকট থেকে ৩৫,৫০০/- টাকা উদ্ধার করা হয। আটককৃতরা জানায় সুজন দুই লক্ষ টাকা, বিপ্লব এক লক্ষ টাকা এবং পারভেজ দুই লক্ষ টাকা ভাগ হিসেবে পায়। বাকি টাকা সোহাগ নিজের কাছে রেখে দেয়। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশে থেকে সোহাগ টাকা বহনকারীর গতিবিধি সুজনকে জানায় এবং রহিম রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পলায়নে সহায়তা করে। ঘটনার কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি রহিমের তা সুজনের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, সুজন নিজেকে দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে পরিচয় প্রদান করে এবং রহিম পৌর ছাত্রলীগের কথিত নেতা হিসাবে সর্বত্র নিজেকে পরিচয় দেয় যেটা আটককৃত সুজন নিশ্চিত করে। যদিও এই ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি বিধায় তাদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আটক কৃতদের এই মামলায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: