পদ্মা নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | ৪ জুলাই ২০২২, ০৬:০২

সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পদ্মা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। রোববার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পদ্মা ভাঙ্গণ থামাও হরিরামপুর বাঁচাও ফেসবুক গ্রুপ এ কর্মসূচি পালন করেন। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বালু তুলে হরিরামপুরকে ক্ষতি করছেন। এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বালু উত্তোলনের কারণে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । তাঁরা নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল বলেন, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে পদ্মা নদী পারে ভাঙন বেড়েছে। অনেকের বাড়িঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদযালয়ের চারতলা ভবনটি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি। ডিসি মহোদয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, পদ্মায় ভাঙনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমার হারুকান্দি ইউনিয়নের জনগণ। পদ্মায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। 

হরিরামপুর উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন, হরিরামপুরের বেশির ভাগ এলাকা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে ভাঙন বাড়তেই থাকবে। অবৈধভাবে পদ্মায় ড্রেজার দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করতে হবে। 

পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, পদ্মা পাড়ের সক্রেটিসখ্যাত বাবু হরিপদ সূত্রধর বলেন, ১৯৭৭ সালে পদ্মায় প্রথম বাড়ি ভাঙছে। আমার বাড়ি ৬ বার ভেঙেছে। এখানে অনেকের বাড়ি ১০ বারও ভেঙেছে। ভাঙনের কষ্ট, যন্ত্রণা কতটুকু আমি জানি। প্রকৃতির অত্যাচার, পদ্মার অত্যাচার অনেক সহ্য করেছি কিন্তু প্রতিহত করতে পারিনি। এখন পদ্মায় বালু তুলে মানুষও অত্যাচার করছে। এদের প্রতিহত করতে হবে। কিছু মানুষ রয়েছে যারা অমানুষের মতো পদ্মায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে, যার দরুন বাড়িঘর, ফসলি জমি ভাঙছে। প্রশাসনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।

মানববন্ধনে বয়ড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান মহিদ, হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা পবিত্র কুমার, যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান চৌধুরী মিল্টন, কৃষক লীগের সদস্য সচিব শহীদুর রহমান শহীদ,কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদসহ ফেসবুক গ্রুপের দেড় শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, হরিরামপুরের শেষ এবং ঢাকার দোহার উপজেলার শুরু এলাকায় ড্রেজিং এর স্পট। হরিরামপুর উপজেলা থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার স্পটে যেতে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে। আমরা গিয়ে তাদের পাইনা। ড্রেজারগুলো পাশের উপজেলার ভিতরে নিয়ে রাখে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারিনা। ঢাকার দোহার উপজেলা প্রশাসন এবং হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য গত শনিবার জেলা প্রশাসক স্যারকে রিপোর্ট দিয়েছি বলেও জানান তিনি। 

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: