রাজধানীর ডেমরায় গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাতে মধুবাগ ১৯/৫ জাকারিয়ার বাড়ীর দ্বিতীয় তলা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধারের করেছে ডেমরা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় স্ত্রী সীমা সুলতানা (৩৯) গলাকাটা অবস্থায় বিছানায় শোয়া পড়েছিল এবং ঘটনাস্থল থেকে ধারালো বটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় স্বামী মো. লিয়াকত হোসেনকে (৫০) বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে মঞ্জিল আলম লিমন (২০) ডেমরা থানায় গলা কেটে মাকে হত্যা করার অপরাধে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। অপরদিকে একই রাতে বাবার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী লিমন এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন। তার একমাত্র বোন লিমা সুলতানা স্বামীসহ তাদের পাশের ফ্ল্যাটেই ভাড়া থাকেন। নিহত লিয়াকত হোসেন পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে একটি ফার্মেসীর ব্যবসা চালাতেন। মা সীমা সুলতানা একজন গৃহিনী ছিলেন। তারা গত ২০ বছর ধরে একই এলাকায় বসবাস করতেন ভাড়াটিয়া হিসেবে। এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে নিহত ওই দম্পতির সংসারে আর্থিক সমস্যা বিরাজ করছিলো বলে মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হতো।
আরও জানা যায়, গত ২৭ জুন সোমবার রাতে লিমনের মা নিজ হাতে লিমনকে খাওয়ানোর পর তার বাবাকে নিয়ে তাদের রুমে শুয়ে পড়ে। এদিকে রাত ৩ টার মধ্যে লিমন তার ঘরে মোবাইল চালানো অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে বাবা মায়ের ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে লিমন তার বোনের ঘরে নাস্তা করে ব্যক্তিগত কাজে নারায়ণগঞ্জ চলে যায়। এদিকে বোন লিমা দুপুর ২ টা পর্যন্ত বাবা মায়ের ঘরের ভেতর থেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে লিমনকে ফোন করে জানায়। পরবর্তীতে লিমন বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়ী ফিড়ে বন্ধ ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে তাকালে তার মাকে গলাকাটা ও বাবাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। এ সময় বাড়ীওয়ালাসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পুলিশে খবর দেয়। নিহত লিয়াকত আলী ফরিদপুরের বোয়ালমারি থানার দুলপুকুরিয়া গ্রামের মৃত আজিম মোল্লার ছেলে। সীমা সুলতানা বাড়ি মাগুরা জেলায়।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা দম্পতির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মিটফোর্ড স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। তদন্তে জানতে পেরেছি ওই দম্পতির মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকলে আর্থিক অনটনের কারণে তাদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ হতো। ময়না তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এ দু’টি মৃত্যুর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এবিষয়ে মোবাইল ফোনে লিমনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার বন্ধু ফোন ধরে জানায় লিমন ও তার বোন লিমা বিমর্ষ অবস্থায় রয়েছে, তারা কারও সঙ্গে কোন কথা বলতে পারছে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: