পাহাড়ের পানি সংকটের কারণে বয়ছে মৃত্যু মিছিল। পাথর উত্তোলন ও গাছ নিধনসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্য না থাকায় দুর্গম এলাকায় এখন পানি জন্য হাহাকার। ঝিড়ি ঝর্ণাতে পানি শুকিয়ে যাওয়াতেই ময়লাযুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে দুর্গম এলাকার বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের। এতে ডায়রিয়া রোগের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকজন। এতে কোন প্রতিকার আনতে পারছেন নাহ স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা প্রশাসন।
গেল ১২ জুন থানচি উপজেলার দুর্গম এলাকার রেমাক্রীতে ইউনিয়নে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জন। ৬ দিনের ব্যবধানে আবারও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫জন।তারমধ্যে আলীকদমে উপজেলায় একই রোগের আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বান্দরবান সিভিল সার্জন সর্বশেষ তথ্যনুযায়ী- ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০জন।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান সিভিল সার্জন ডাঃ নীহারঞ্জন নন্দী ।
তিনি জানিয়েছেন, বর্ষার শুরুতে দুর্গম এলাকা গুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ময়লাযুক্ত পানি পান করাতেই এই সমস্যা সম্মুক্ষীন হতে হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, থানছি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। আক্রান্ত এলাকার পরিস্থিতি দিনের নিয়ন্ত্রণে আনতে মেডিকেল দল কাজ করছে এবং পর্যাপ্ত ঔষধ পাঠানো হয়েছে।
নিহত হলেন- মেনথাং ম্রো (৪৯), লংঞী ম্রো (৪৫), ময় ম্রোর (১১), সংওয়ে ম্রো (৫০), প্রেণময় ম্রো (৪০), ক্রাইয়ং ম্রো (৬০), ক্রায়ক ম্রো (১৮), রয়ং ম্রো (৪৮), ক্রেলি ম্রো (৩৬)। তারা সবাই থানচি উপজেলার রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অন্যদিকে গত ১১ জুন আলীকদম উপজেলায় অতিরিক্ত স্যালাইন দেওয়ায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীরা জানিয়েছে, দুর্গম এলাকায় একটি মাত্র সমস্যা পানি। সে পানিতে বৃষ্টি পড়লে পাহাড়ের বিভিন্ন জীবাণু বহন করে নদী বা ঝিরিতে মিশে দুষিত হচ্ছে । এ দূষিত পানি ব্যবহার ও পান করার কারণে এলাকার মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। অতি দুর্গম এলাকা হওয়ায় ঔষধ ও চিকিৎসা সেবার অভাবে অনেকজন মারা গেছে।
রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুশৈথুই মারমা সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যেখানে নেট ওয়ার্ক বিহীন সেসব এলাকাতে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা। সেসব ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে গেলে সময় লাগে ৫ হতে ৬ ঘন্টা।
থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ জানান, রেমাক্রী এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকটের কারণে ডায়রিয়া সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রত্যেক এলাকায় ওষুধ ও স্যালাইন পাঠানো হয়েছে এবং ১০ জনের একটি মেডিকেল টিম ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া অত্র এলাকায় দুই এক দিনের মধ্যে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: