নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিহারিদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
সোমবার ভোরে আদমজী ইপিজেডের পকেট গেট এলাকায় এই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দফায় দফায় চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, গত শুক্রবার কলোনির শাহী মসজিদের ইমাম ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা কর্তৃক মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে বক্তব্য রাখেন। তখন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, ভারতের বিষয় ভারতে থাকুক, এখানে আলোচনার দরকার নেই। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি অনুরোধ করলে মুসল্লিদের হামলার শিকার হন।
জানা গেছে, এ ঘটনায় শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২০-১২৫ জনকে আসামি করা হয়। রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভোররাত পর্যন্ত আদমজীর সুমিলপাড়া বিহারি কলোনিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর প্রতিবাদে সোমবার ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ঘেরাও করেন বিহারি কলোনির বাসিন্দারা। এ সময় তারা আদমজী-চাষাড়া সড়ক অবরোধ ও কিছু স্থানে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভও শুরু করেন।
ওসি বলেন, রাস্তা থেকে সরে যেতে বললে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল মারতে শুরু করে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। বিহারিদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এ সময় লাঠিচার্জ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছোড়া হয়। অবরোধ করা সড়ক থেকে বিহারিদের সরাতে পরে পুলিশের সাথে কাজ করেছে র্যাবের সদস্যরাও।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত ৩১ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে মোট কত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে বলতে পারেননি তিনি। কী পরিমাণ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়া হয়েছে তা পরে জানানো হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১১টা পর্যন্ত আদমজী ইপিজেডের পকেট গেট এলাকায় সংঘর্ষ চলেছে। এখন (দুপুর সাড়ে ১২টা) পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষ থেমেছে। তবে কলোনির বাসিন্দাদের কেউ কেউ আশপাশে রয়েছেন। এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: